রিপোর্ট : ইমাম বিমান: ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার বাগড়ী গ্রামে অসুস্থ এক মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগার করতে তার একমাত্র ৮ বছরের শিশু সন্তান রমজান এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করছে।
দারিদ্র পরিবারের রিক্সা চালক বাবার পক্ষে রমজানের মায়ের চিকিৎসা করাতে সম্ভব না হওয়ায় দিশাহারা পরিবারের একমাত্র ৮ বছরের শিশু সন্তান রমজান মা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবে শুনে পিতা মাতার অজান্তেই সে ভিক্ষা করা শুরু করেছে। কিছুদিন পূর্বে হঠাৎ জ্বরে অাক্রান্ত হয়ে পা সহ কোমরের নিচের অংশ অবশ হওয়ায় স্থানীয় ভাবে চিকিৎসায় রমজানের মা সুস্থ না হলে জাহাঙ্গীর হাফিজাকে নিয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে। ৭ দিন চিকিৎসার পর সুস্থ না হলে চিকিৎসক তার রোগ নির্নয়ের জন্য কিছু শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা নিশ্চিত করে বলতে পারবেন তাকে পুরোপুরি ভাল করতে চিকিৎসায় কত টাকা ব্যয় হবে নাকি হাফিজা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবে। চিকিৎসায় শারীরিক পরীক্ষা নীরিক্ষা করার জন্য ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচের প্রয়োজন। দিনমজুর রিক্সা চালক জাহাঙ্গীরের হাতে টাকা না থাকায় সে তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ীতে চলে অাসে।
তার চিকিৎসার জন্য টাকা যোগার করতে না পারায় বসতভিটাহীন দরিদ্র রিক্সা চালক স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন খান বিভিন্ন লোক জনের কাছে গিয়ে টাকার জন্য ধর্না দিয়েও টাকা ম্যানেজ করা সম্ভব হয়নি। টাকার অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে হাফিজা বেগম (২৮) নামের এক দরিদ্র গৃহবধু চিরতরে পঙ্গু হতে চলছে। মায়ের এমন পরিস্থিতিতে বসে নেই ৮ বছরের শিশু রমজান।
এ বিষয় শিশু রমজানের বাবা জাহাঙ্গীর জানান, অামি একটি রিক্সা দৈনিক ২০০ টাকা ভাড়ায় নিয়ে যে টাকা কামাই করি তা থেকে সংসার চালানোর খরচ ছাড়া অার কিছুই সম্ভব হয় ননা এমনকি ছেলেটার স্কুলে বই খাতা কিনে দিতেও হিমশিম খেতে হয়। কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন তার উপর অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। রাজাপুর উপজেলার ইন্দ্রপাশা গ্রামের মতিয়ার রহমানের মেয়ে খাদিজা বেগমকে দীর্ঘদিন অাগে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার কাসেম খানের ছেলে জাহাঙ্গীর খানের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ভূমিহীন জাহাঙ্গীর খান স্ত্রী হাফিজাকে নিয়ে শশুর বাড়ী বাঁশতলা গ্রামের অাশ্রায়ন কেন্দ্রে বসবাস করে অাসছিলো। কিছুদিন অাগে সেখান থেকে তাদেরকে বের করে দেয়া হলে নিরুপায় হয়ে তারা বাগড়ী গ্রামের এক অাত্বীয়ের বাড়ীতে পরিবার সহ অাশ্রয় নিয়ে বসবাস করে অাসছিল। অামার স্ত্রীর জন্য দেশের বিত্তবান ব্যক্তিদের দৃষ্টি অাকর্ষন করছি।