রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে গত দুই দিনে ৪ শিশু ও মহিলাসহ ২১ ব্যক্তি অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি চিকিৎসক দল ওই গ্রামে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার উক্ত দুটি গ্রামে ১৩ জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত করা হয়। বুধবার আরো ৮জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত রোগীরা হলেন, মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (১৪) এবং কালিয়াকৈড় গ্রামের শাহ আলম (৪০), আকরাম হোসেন (৩০), সেরাজুল ইসলাম আরিফ (৩৫), মাসুদ রানা (২৭), আব্দুস সামাদ (৫০), লিমা খাতুন (৩), ফাতিমা বেগম (৭০), রাশিদা খাতুন (৩১), আব্দুল হান্নান (৪০), জাহানারা খাতুন (৩০), বাদশা মিয়া (১৪), সেতু (১০), সিয়াম (১০), আমনত আলী (৪০), বুুলবুলি খাতুন (২৫), লিপি খাতুন (৩০), রাবেয়া (৫), হাবিব (৩) ও আব্দুল মান্নান (৫০)।
অসুস্থ গরুর মালিক সেরাজুল ইসলাম আরিফকে অসুস্থ গরু জবাই করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
স্থানীয় লোকজন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলা থেকে ২৫ মে মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (১৪) অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে বাড়ীতে আসার ১ সপ্তাহ পর অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়। পরে গত ২৯ মে কালিয়াকৈড় গ্রামের সেরাজুল ইসলাম আরিফ তার একটি অসুস্থ ষাঁড় গরু জবাই করে কম মূল্যে গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিক্রি করে। এই মাংস যারা জবাই, কাটা, বন্টন করেছেন এবং খেয়েছেন তাদের সকল পরিবারের লোকজন পর্যায়ক্রমে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত লোকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে লালচে ফোসা ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে রয়েছে জ্বর ও ব্যথা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জাফরুল ইসলাম জানান, তার নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল গত দুই দিনে মোহনপুর ও কালিয়াকৈড় গ্রামে মোট ২১ ব্যক্তিকে অ্যানথ্রাক্স রোগ আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডা: জাফরুল আরো জানান, যারা অসুস্থ গরুর মাংস খেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই অ্যানথ্রাক্স এ আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে বিশেষ কওে কালিয়াকৈড় গ্রামে অ্যানথ্রাক্স রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা
হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মমর্তা হেলাল উদ্দিন খান জানান, অসুস্থ গরুর মালিক কালিয়াকৈড়ের সেরাজুল ইসলামকে উল্লাপাড়ায় মঙ্গলবার বিকেলে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করলে বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এদিকে কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে কৃষকদের গরুগুলোকে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে এবং এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করতে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।