নিউজ ডেস্ক:
॥ স্মরণ সাহা। নন্দিত নাট্যকর্মী। সাম্প্রতিক সময়ে মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের একজন তুখোর অভিনেতা ও নির্দেশক। অভিনেতা হিসেবে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন তিন মাধ্যমেই। সাম্প্রতিক সময়ে তার অভিনীত জাগরণী থিয়েটারের ১৫তম প্রযোজনা ‘রাজার চিঠি‘ নাটকটি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মাহফুজা হেলালী রচিত নাটটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ। শিল্পকলা একাডেমির প্রধান মিলনায়তনে সোমবার ‘রাজার চিঠি’ নাটকটির পঞ্চম মঞ্চায়ন হলো। এছাড়া ৪টি প্রদর্শনীর জন্য ১৩ দিনের সফরে আগামী ২১ ডিসেম্বর ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন তিনি। ‘রাজার চিঠি’ নাটকটিতে স্মরণ সাহা মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
নন্দিত অভিনয় শিল্পী স্মরণ সাহার জন্ম ফরিদপুরের মামা বাড়িতে। সেখানেই বেড়ে ওঠেন। তবে বর্তমানে সাভারে বসবাস করছেন। স্মরণ সাহা অভিনয় জগতে পা রাখেন ছোট বেলায়। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াকালীন সূর্যসাথী খেলাঘর আসর ফরিদপুর শাখার আয়োজনে সুকুমার রায়ের রচনা এবং অমিতাভ বসুর নির্দেশনায় ‘অবাক জলপান’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। তাকে উদ্বুদ্ধ করেন স্বর্গীয় তপন বোস। নাট্যগুরু মোস্তাফিজুর রহমান আজাদের নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বিসর্জন’ ও ‘মুক্তধারা’, মনোজ মিত্রের ‘কেনারাম বেচারাম’, ‘গিট্টু বিচ্ছু চক্র’, ‘নৈশভোজ’, ‘মড়া’ নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে দৃষ্টিপাত নাট্যসম্প্রদায়ের হয়ে ম আ সালামের রচনা ও নির্দেশনায় ‘নাগর আলীর কিচ্ছা’ এবং সাম্প্রতিক সময়ে খন্দকার তাজমী নূর নির্দেশিত ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকে অভিনয় করেন। এরপর নিজ ভিটা সাভারের ১৯৯৫ জাগরণী থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। এ দলের হয়ে আব্দুর রাজ্জাকের রচনা ও রফিকুল ইসলামের নির্দেশনায় ‘মৃত্যু আরেকবার’, ‘ছাড়পোকা’, ‘পাগলের প্রলাপ’, ‘জালেম’, আসাদ বিন কাদেরের রচনা ও নির্দেশনায়- ‘আধুনিক রাক্ষস’, ‘রক্তাক্ত বর্ণমালা’, আব্দুল হালিম আজিজের রচনা ও আপেলের নির্দেশনায় ‘বিষবৃক্ষ’, রফিকুল ইসলামের নির্দেশনায়- মনোজ মিত্রের ‘কেনারাম বেচারাম’, নিজের নির্দেশিত নাটক মনোজ মিত্রর ‘নৈশ্যভোজ’ এবং আব্দুল হালিম আজিজের ‘বুদ্ধু’ নাটকে অভিনয় করেন। বর্তমানে দলের ‘চিত্তবিনিময়’ ও ‘রাজার চিঠি’ নাটকে অভিনয় করছেন। মঞ্চের পাশাপাশি টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রেও সমানতালে অভিনয় করছেন। পরিচালক সুলতান আহমেদের হাত ধরে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। একে একে আহসান হাবিবের রচনা ও সুলতান আহমেদের পরিচালনায় ধারাবাহিক ‘সময়ের অতিথি’, এসএ হক অলিকের ‘কমলাবতী’, ‘চিকেন টিক্কা মসল্লা’, ‘সাহিত্য প্রেম’, ‘সোনার সূতোয়’, ‘গেন্দু চোরা’, ‘শুধু একদিন ভালবাসব’, ‘লেডিস ফাস্ট’, ‘হঠাৎ একদিন’, ‘আয়নাঘর’, আমজাদ হোসেনের ‘কৃষ্ণকলী’, ‘মা তুই কেমন আছিস’, মঈন খান রুপীর ‘সময়ের রং বদল’, মোহানী মান্নান শফিকের ‘মীর জলিলের সর্পদংশন’, ‘মেঘবালিকা’, ফরিদুর রহমানের প্রযোজনায় ‘কেউ রবে না বাইরে’, অরণ্য আনোয়ারের ‘দহন’, মহিউদ্দিন মাসুমের ‘ভূতের বাড়ি’, ‘তেলেসমাতি’, সঞ্জয় বড়ুয়ার ‘শেষ বিকেলের গল্প’, ‘ভ-ুলুম’, ‘আমি ডিভোর্স চাই’ প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেছেন। এছাড়া সুলতান আহমেদের ‘আদরের ছোট ভাই’, এসএ হক অলিকের ‘আরও ভালবাসব তোমায়’, ‘এক পৃথিবী প্রেম’, শাহীন সুমনের ‘পাগলের মত ভালবাসি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চলেছেন সাভারের এই নিবেদিত সাংস্কৃতিক কর্মী। তিনি মনে করেন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের পৃষ্ঠপোষকতার দিক থেকে অনেকটাই অবহেলিত সাভার জনপদ। এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সংস্কৃতি চর্চা অনেকটাই ভূমিকা রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই অঙ্গনে পৃষ্ঠপোষকতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।