নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর অভিজাত হোটেল সোনারগাঁও, শেরাটন, ওয়েস্টিন ও রেডিসনের কাছে সরকারের পাওনা ৫৩ কোটি টাকা।
এসব অভিজাত হোটেল বার ও ড্যান্স ফ্লোরের ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক পরিশোধ করেনি। এর পরিমাণ কমপক্ষে ৫৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) যুগ্ম কমিশনার মো. বদরুজ্জামান বলেন, ড্যান্স ফ্লোর ও বারের শুল্ক কর বাবদ এসব বিলাসবহুল হোটেলের কাছে কম করে হলেও ১০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির তথ্য উদঘাটন হয়েছে। এ সম্পর্কিত মামলার চূড়ান্ত রায়ও সরকারের পক্ষে এসেছে। দ্রুত এ টাকা আদায় করা হবে।
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ জানায়, রাজধানীর অভিজাত শ্রেণির বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বিলাসবহুল এসব হোটেল। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁও, শেরাটন (পরে নাম পাল্টে হয় রুপসী বাংলা), গুলশানের ওয়েস্টিন ও রেডিসন। এসব হোটেলে রয়েছে আলাদা পানশালা বা মদের বার ও ড্যান্স ফ্লোর। বিলাসী এসব পানশালা ও ড্যান্স ফ্লোরের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা আছে। অথচ গত ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এসব নামিদামি হোটেল কোনো শুল্ক পরিশোধ করেনি। পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিট অনুসন্ধান করে হোটেলগুলোর ৫৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করে।
এলটিইউ সূত্র জানায়, গত ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্তও বিলাসবহুল এসব হোটেলের ড্যান্স ফ্লোর ও বারের কর সঠিক হারে পরিশোধ করা হয়নি। গত ৪ বছরের হিসাব টানলে দেখা যায়, এসব হোটেলের কাছে বকেয়া পড়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, শুধু ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত হোটেল সোনারগাঁও ২০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। এ ছাড়া হোটেল শেরাটন ১৮ কোটি ৮৪ লাখ, ওয়েস্টিন ১০ কোটি ও রেডিসন ৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
সূত্র জানায়, এসব বিলাসবহুল হোটেলের রাজস্ব জালিয়াতির তথ্য উদঘাটন করে এলটিইউর ভ্যাট অধিদপ্তর। এরপর সরকারের প্রাপ্য এ বিপুল অংকের রাজস্ব আদায়ে দাবিনামা জারি করলে দিতে অস্বীকৃতি জানায় হোটেল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় কোনো গতি না দেখে হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে আদালতে সরকারের পক্ষে মামলা করে এলটিইউর ভ্যাট অধিদপ্তর। মামলার রায় সরকারের পক্ষে আসলে হোটেল কর্তৃপক্ষ রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করে। এরপর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে গত ১২ জুলাই আপিল বিভাগ এ মামলার রায় দেন। রায়ে হোটেল সোনারগাঁও, শেরাটন, ওয়েস্টিন ও রেডিসনকে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে সরকারের প্রাপ্য ৫৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। কিন্তু মামলার চূড়ান্ত রায়ের পরও হোটেলগুলো রাজস্ব পরিশোধ করছে না।