নিউজ ডেস্ক:
পবিত্র রমজান মাসে দেশি চিনি কেজিপ্রতি ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করবে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। তাদের হাতে প্রায় ৬০ হাজার টন চিনি রয়েছে।
বিএসএফআইসি জানায়, সংস্থাটির অধীনে থাকা ১৫টি চিনিকল থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৬০ হাজার টাকা দরে বস্তায় খোলা চিনি বিক্রয় করা হচ্ছে। যে ক্ষেত্রে কেজি পড়ছে ৬০ টাকা। তালিকাভুক্ত পরিবেশকদের একই দরে চিনি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা মহানগরে আগোরা, স্বপ্ন, মীনাবাজার, সিএসডি, ডেইলি শপিং ইত্যাদি সুপারশপে প্যাকেটজাত চিনি ৬৫ টাকা দরে সরবরাহ করা হচ্ছে। তারা তা সর্বোচ্চ ৭০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারবে বলে জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা।
ঢাকার দিলকুশায় অবস্থিত চিনিশিল্প ভবনের নিচতলায় প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাবে। এছাড়া আখচাষীদের প্রাপ্য চিনি এবং প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে।
সনৎ কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চিনির দাম বাড়তে দেব না। এবার সব পণ্যের দাম বাড়লেও চিনির দাম বাড়েনি।’
আরেক সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, বাজারে চিনির দাম এখন কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। এক সপ্তাহে দাম ৫ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে এক বছর আগের তুলনায় কেজিপ্রতি দর ৩১ শতাংশ ৩১ শতাংশ বেশি।
সরকারি চিনিকলগুলো বছরে ৬০ হাজার টনের মতো চিনি উৎপাদন করতে পারে। আর আমদানি হয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। এখন প্রতি কেজি চিনিতে সরকার ২৪ টাকার মতো কর নেয়। চিনির ওপর বাড়তি করারোপ শুরু হয়েছিল চিনি শিল্প করপোরেশনকে সুরক্ষা দিতেই।
২০১৫ সালে বিশ্ববাজারে দাম কমে যাওয়ায় ঢাকার পাইকারি বাজারে চিনির দর কেজিপ্রতি ৩৫ টাকায় নেমেছিল। তখন চিনি শিল্প করপোরেশনের চিনির দাম ছিল ৩৭ টাকা, যার উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেশি। এতে বিএসএফআইসি ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে। এরপর সরকার চিনি আমদানির ওপর ২০১৫ সালে ব্যাপক কর আরোপ করে।
এরপর শুধু কর বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ গত বাজেটেও বেড়েছে। বাজেটের আগে চিনির দর কেজিপ্রতি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা ছিল। অন্তত তিন দফায় বেড়ে চিনি এ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৬৫ টাকা ছিল। দাম বাড়ল গত এক সপ্তাহে।
উৎপাদন বাড়াতে না পেরে চিনি শিল্প করপোরেশন ২০১৭ সালে এক লাখ টন চিনি আমদানি করে। এতে বিপুল লোকসান হয়। এবারও তারা এক লাখ টন আমদানির দরপত্র আহ্বান করেছিল।
চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে টাকা পাওয়া যায়নি। তবে আমরা এই পবিত্র রমজান উপলক্ষে ৬০ হাজার টন চিনি বিক্রি করব।’
ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে রোজায় আড়াই লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে।