নিউজ ডেস্ক:
২ বছর ধরে ছেলেকে অল্প অল্প বিষ দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করছিল এক মা। ৫ বছরের সেই ছেলে সবকিছু বুঝতে পারলেও মাকে কোনও দিন প্রশ্ন করেনি সে। বরং উল্টে বাবাকে বলেছিল ‘আমি ঠিক আছি, তুমিও ভাল থেকো।
নারগিস শেফিয়ার্ড আর হামিদ দানার একমাত্র ছেলে দানিয়েল। ২০০৭ সালে দু’জনের বিয়ে হয়েছিল ইরানে। দানিয়েল জন্ম নেয় ২০০৯ সালে। তারপরে ২০১১ থেকে তারা সপরিবারে আমেরিকার গেটার্সবার্গে বসবাস শুরু করে। কিন্তু সুখের সংসার বেশি দিন টেকেনি। ২ বছর পরে শেফিয়ার্ড আর হামিদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আর দানিয়েলকে ভাগাভাগি করে দেখার অনুমতি মেলে মা–বাবার। সপ্তাহে চারদিন সে মায়ের কাছে থাকত, আর সপ্তাহের তিনদিন থাকত বাবার কাছে।
এই ভাগাভাগির ভালবাসা পেয়েও চলছিল দানিয়েলের। কিন্তু শেফিয়ার্ড হঠাৎই ছেলের উপরে বিরূপ হতে শুরু করেন। সেই দানিয়েলের উপরে চরম অত্যাচার শুরু করেন। এমনকি ছেলেকে ধীরে ধীরে বিষ দিয়ে মারা পরিকল্পনা করেন শেফিয়ার্ড। সব বুঝেও দানিয়েল তার বাবাকে কখনও অভিযোগ করেনি। বরং সে উল্টে বলেছিল ‘আমি ঠিক আছি। ’ এরই মধ্যে কাজ হারিয়ে চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েন শেফিয়ার্ড।
২০১৫ সালের ১৬ জুন শেফিয়ার্ড এক বোতল বিষ তার ছেলের গলায় ঢেলে দেয়। দানিয়েল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে গাড়ির পিছনের সিটে শুইয়ে দেয়। তারপর গাড়ি চালিয়ে শেফিয়ার্ড হাজির হন একটি গ্যাসের দোকানে। সেখানে এক বোতল গ্যাস ভরে গাড়ির মধ্যে গ্যাস ছড়িয়ে দেন তিনি। তারপর তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। ৪০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় শেফিয়ার্ডকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু দানিয়েল আর ফেরেনি।
প্রায় ৪ মাস হাসপাতালে থাকার পরে শেফিয়ার্ডের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়। ছেলে হত্যায় দোষী সাব্যস্ত করে মেরিল্যান্ড আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সাজা শুনে কিন্তু চুপ করে ছিল শেফিয়ার্ড, আদালতে একটাও কথা বলেনি সে। যদিও মানসিক অবসাদ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে শেফিয়ার্ড, এমনই মনে করছেন মনোবিদরা।