নিউজ ডেস্ক:
‘হালাল খাদ্য বিক্রির সাইনবোর্ড রয়েছে কিন্তু হালালের সংজ্ঞা অনুযায়ী বিস্তারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় না-এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। রমজানের আমেজে মুসলিম সম্প্রদায় যাতে সত্যিকারের ‘হালাল খাদ্য’ গ্রহণে সক্ষম হন সেদিকে খেয়াল রেখে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্য এটনি জেনারেল ক্রিস্টফার পরিনো এ অভিযান পরিচালনা করছেন।
ইতোমধ্যেই প্যাটারসনে ৫টিসহ ১৫ রেস্টুরেন্ট, গ্রোসারিকে জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ ৫০০ ডলার করে। রেস্টুরেন্ট এবং গ্রোসারি স্টোরগুলো হচ্ছে প্যাটারসনে আল হিলাল মীট এ্যান্ড ফিশ মার্কেট, আল কুমা রেস্টুরেন্ট এ্যান্ড হালাল মীট, বাংলা টাউন সুপার মার্কেট, প্যারাডাইস হালাল মীট এবং স্টার হালাল মীট, চেরী হিলের ইন্ডিয়ান ভিলা, জার্সি সিটির আমিন’স চায়নিজ হালাল রেস্টুরেন্ট আইসলিনের রেড চাটনী এবং শালিমার গ্রীল এ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, নিউ ব্রান্সউইকের সাহারা রেস্টুরেন্ট বেকারি, সামিটের নিগীন পার্শিয়ান গ্রীল, মরমাউথ জাংসনের ক্যাফে কালাল ইটালিয়ানো এবং বেয়নের পাশা ইউএসএ। এর বেশ কয়েকটির মালিক বাংলাদেশিরা বলেও এটর্নী জেনারেল অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এটর্নী জেনারেলের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, হালাল রীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করার কোন তথ্য ওইসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি বা সর্বসাধারণের জন্যে ডিসপ্লে করাও হয়নি। কীভাবে পশু জবাই করা হচ্ছে, মাংস কীভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং কীভাবে তা স্টোরে সরবরাহ করা হচ্ছে, কীভাবে সেগুলো রান্না করা হচ্ছে-কোনো কিছুই উল্লেখ নেই। যদিও নিউজার্সি রাজ্যের ‘হালাল ফুড কঞ্জ্যুমার প্রটেকশন এ্যাক্ট’ অনুযায়ী এগুলো অবশ্যই গ্রাহকের দৃষ্টিতে পড়তে হবে। তবে ‘হালাল’ শব্দের ধর্মীয় কোন ব্যাখ্যা নিউজার্সি প্রশাসনে না থাকলেও ‘নিউজার্সি কঞ্জ্যুমার ফ্রুড এ্যাক্ট’ অনুযায়ী এসব খাদ্য যেখানে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করা হবে, সেখানে অ-হালাল হিসেবে বিবেচিত কোনো খাদ্য রাখা যাবে না। মাংস কাটার জন্য পৃথক বোর্ড রাখতে হবে। ফ্রিজও থাকতে হবে সম্পূর্ণ আলাদা।
এটর্নী জেনারেল ক্রিস্টফার পরিনো বলেছেন, রোজাদাররা যখন খাদ্য-সামগ্রী ক্রয় করবেন, তখন তাদের আস্থা থাকতে হবে যে, সেগুলো ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করতেই পবিত্র রমজানের প্রাক্কালে এই অভিযান চালানো হয়েছে, যাতে ব্যবসায়ীরা সতর্ক থাকেন হালাল খাদ্য প্রস্তুতের ব্যাপারে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ‘হালাল’ লিখে রাখলেই তারা দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। এ অভিযানে ১১০টি রেস্টুরেন্ট ও গোসারি পরিদর্শন করা হয়। এগুলো প্যাসেইক কাউন্টি থেকে ক্যামডেন কাউন্টির মধ্যে অবস্থিত এবং সবগুলোতেই ‘হালাল’ লেখা সাইন রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নিউজার্সি কঞ্জ্যুমার এফেয়ার্স ডিভিশনের পরিচালক স্টিভ লী বলেন, হালাল খাদ্য প্রস্তুত ও বিক্রির ক্ষেত্রে আমাদের আইন যথাযথভাবে বলবৎ রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। রেস্টুরেন্ট অথবা গ্রোসারির সামনে সাইন লাগালেই চলবে না, সব সময় হালাল খাদ্য প্রস্তুত-প্রণালীও প্রদর্শন করতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের পরিদর্শকরাও যাতে তা দেখতে পারেন।
এ অভিযানের সংবাদ আশপাশের রাজ্যসমূহে ছড়িয়ে পড়ার পর ‘হালাল’ সাইনওয়ালা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও সবধরনের প্রক্রিয়া অবলম্বনের প্রয়াস পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে হাস-মুরগী-ছাগলের খামার এবং রেস্টুরেন্টে ‘হালাল’ ব্যবস্থা অবলম্বনের সবকিছু তৈরি করা হচ্ছে। ধর্মীয় অনুভূতির সাথে ব্যবসায়ীরা প্রতারণা করবেন না বলেই ক্রেতা-সাধারণ আশা করছেন।