বিদেশে আম রপ্তানিতে হরিণাকুন্ডুর আমচাষীরা চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন !
স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুু উপজেলার সবুজে ঘেরা প্রতিটি গ্রামে এবার শুধু আম আর আমের সমাহার। উপজেলার ১৩০টি সবুজ শ্যামল গ্রামের মানুষের বসত বাড়ী সহ মাঠ ক্ষেত যেন শুধুই সবুজের সমাহার। এই সবুজ প্রকৃতির মাঝেই যেন নিজেদের খুজে পাচ্ছেন আম চাষীরা। প্রতিটি গ্রামেই মানুষের বসত বাড়ী সহ যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু আম বাগান ছাড়া যেন অন্যকিছু চোখে পড়ে না।
ইতিমধ্যেই আম চাষের জন্য বিখ্যাত হিসাবে স্বীকৃতি মেলেছে উপজেলার ১৩০টি গ্রামের আম চাষীদের। সরকারের কৃষি দপ্তর ইতিমধ্যেই সরকারের সাথে এখানকার আমচাষীদের উৎপাদিত আম রূপালী, হিম সাগর ও ল্যাংড়া জাতের আম বিদেশে রপ্তানির জন্য চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও এখানকার উৎপাদিত আম জেলার মানুষের চাহিদা মিটিয়েও রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকরী বাজারে যাচ্ছে। ১৩০ টি গ্রামের দিগন্ত জোড়া ফসলের ক্ষেত সহ বসত বাড়ী ঘিরে হাজারও মানুষ বছরের পর বছর ধরে করে আসছে আম চাষ। এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশায় বেজায় খুশি আম চাষীরা।
কৃষি অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এ উপজেলার প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে এবার হিম সাগর, আম রূপালী, ল্যাংড়া সহ দেশীয় প্রজাতির আম চাষ করে আসছেন চাষীরা। এ বছর ১০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১৫০ মেঃ টন আম উৎপাদন হবে বলে কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা যায়। উপযুক্ত আবহওয়া আর স্থানীয় কৃষি দপ্তরের পরামর্শ ও সার্বিক তদারকীর কারণে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় আম চাষীরা বেশী লাভ বান হবেন বলে তারা জানান। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা করে লাভবান হবেন বলে আম চাষীরা জানান।
এছাড়ও এবার এখানকার আম চাষীরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের আম বিদেশে রপ্তানির জন্য কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে সরকারের সাথে চুক্তি বদ্ধ হওয়ায় আরও বেশি লাভবান হবেন বলে ধারনা করছেন।
উপজেলার ভায়না গ্রামের আমচাষী শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে আমচাষ করছেন, এবার প্রতি বিঘা জমিতে তার দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন।
এছাড়াও অন্যান্য বছর সময়মত আমের মুকুল না আশা এবং তা ধরে রাখার জন্য স্থানীয় ভাবে পরামর্শ না পাওয়ার কারণে তারা আম চাষে ইতিপূর্বে লাভবান হতে পারেন নি। তবে এ বছর উপজেলা কৃষি অফিসের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও তদারকীর কারণে সঠিক পদ্ধতিতে আম চাষ করে তারা অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের আমচাষী এনামুল হক জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে এবার আমরূপালী, হিমসাগর ও ল্যাংড়া জাতের আমের চাষ করছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা। দেশের বাজারে বিক্রি ও বিদেশে রপ্তানি করে তার প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আয় হবে বলে তিনি জানান। হরিণাকুন্ডুু উপজেলার আম চাষীদের সঠিক পদ্ধতিতে আম চাষ ও বিদেশে চাষীদের উৎপাদিত আম রপ্তানির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার মুহম্মদ আরশেদ আলী চৌধুরী জানান এবার মৌসুমের শুরুতেই আমের বাগানে মুকুল আশার আগেই তিনি উপজেলার আম চাষীদের নিয়ে একাধিক পরামর্শ সভা করেছেন। ফলে আম চাষীরা সঠিক পদ্ধতিতে আম চাষ করায় প্রচুর পরিমাণে এবার আম উৎপাদিত হবে।
ইতিমধ্যেই এ হরিণাকুন্ডুু উপজেলার আম চাষীদের উৎপাদিত হিম সাগর, আম রূপালী ও ল্যাংড়া জাতের আম বিদেশে রপ্তানির জন্য কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে সরকারের সাথে আমচাষীরা চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন। ইউরোপিও ইউনিয়নের বায়াররা উপজেলার আম চাষীদের বাগান পরিদর্শনের মাধ্যমে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আম রপ্তানি করা হবে। ফলে আম চাষীরা আরও বেশী লাভবান হবে বলেও তিনি জানান।