নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেছেন, “আমরা এমন সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে পরিবার, সম্প্রদায় ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা পাবে সমান সুযোগ ও অধিকার”।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কমিশন অন দ্যা স্টাটাস অফ উইমেন (সিএসডব্লিউ) এর চলতি ৬১তম সেশন উপলক্ষে বুধবার আয়োজিত ‘এনহ্যান্স স্যোসাল প্রটেকশন ফর পোভার্টি রিডাকশন এন্ড ওমেন্স ইমপাওয়ারমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ও কানাডা ছিল যৌথ আয়োজক এবং এতে সহযোগিতা করে ফাও (FAO) ও ডব্লিউএফপি (WFP)।
প্রতিমন্ত্রী তাঁর কী-নোট স্টেটমেন্টে বাংলাদেশে নারীদের জন্য, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এবং সার্বিকভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সামাজিক সুরক্ষামূলক যে সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পদ্ধতি অনুশীলন করা হয়েছে তা তুলে ধরে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমরা নারীর সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ১৪২টি বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যেখানে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী। আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ ও জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করাসহ ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নারী অধিকারকে সংরক্ষণ করেছি। ব্যবসায় নারীদের দক্ষতা বাড়াতে আমাদের সরকার বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি এসএমই সেক্টরের উন্নয়নে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া, সরকার নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল ও তাদের সন্তানদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ বিভিন্নমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে”।
বিশ্বব্যাংকের উদ্ধৃতি দিয়ে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২৩.২ ভাগে এবং অতি দারিদ্র্যের হার ১২.৯ ভাগে নেমে এসেছে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে আমরা এমডিজি বাস্তবায়নে সফল হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, এমডিজি বাস্তবায়নের এই অভিজ্ঞতা আমাদেরকে ২০৩০ সালের আগেই এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ অর্জনে সাহায্য করবে। ’’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি আলোচনা পর্বে অংশ নেন এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত ডেনমার্কের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আইবি পিটারসন ও কানাডা মিশনের চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রাষ্ট্রদূত মাইকেল ডগলাস দারিদ্র্য বিমোচন ও লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষার প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করেন।
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর প্রতিনিধি ড. শালিনি রায় সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে এবং ফাও এর প্রতিনিধি কারলা মুকাভি নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে আলাদা আলাদা প্রেজেন্টেশন করেন।
ইভেন্টটির সঞ্চালনা করেন ডব্লিউএফপি’র ম্যানন হাওয়ার্ড। অনুষ্ঠানের শুরুতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘মাল্টি সেক্টোরাল প্রোগ্রাম অন ভায়োলেন্ট এগেনিস্ট উইমেন’ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবুল হোসেন সামাজিক সুরক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ এমপি সিএসডব্লিউ’এর ৬১তম সেশনে বাংলাদেশ ডেলিগেশনের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি এবং পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের সচিব জিয়াউল ইসলামসহ ৯ সদস্যের একটি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সিএসডব্লিউএর ৬১তম সেশনে অংশগ্রহণ করছেন। গত ১৩ মার্চ শুরু হওয়া এই সেশন আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে।
সিএসডব্লিউ’র এই ইভেন্টে অংশ নেওয়ার আগে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে মিশনের কর্মকর্তা ও তাঁর ডেলিগেশন সদস্যের সাথে এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।