নিউজ ডেস্ক:
প্রতিদিন তিনটি করে ডিম খেলে বেড়ে যাবে কোলেস্টেরল। ওজন বাড়বে হু-হু করে। এসব শুনে আপনি হয়তো ডিম খাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে গরম সেদ্ধ ডিম চোখের সামনে দেখেও নিজেকে সংযত করে ফেলছেন। ভুল করছেন।
সাম্প্রতিক গবেষণা ও সমীক্ষায় চিকিৎসকরা যা বলছেন, তা আপনার ধারণার সঙ্গে একেবারেই মেলে না। জানেন কি? ভালো থাকার জন্য রোজ দুই থেকে ৩টি ডিম খাওয়া উচিত। ডিম কতটা শরীরের জন্য উপকারী, সাম্প্রতিক গবেষণাই তার প্রমাণ।
হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানার বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় ১৫২ জন অতিস্থুল ব্যক্তিদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দলকে বলা হয়, ব্রেকফাস্টে যা ইচ্ছে তাই খেতে। দ্বিতীয় দলকে বলা হয়, ব্রেকফাস্টে দুইটি করে ডিম খেতে। তৃতীয় দলকে বলা হয় ব্যাগেলস খেতে। রেজাল্টে দেখা গেছে, যারা রোজ দুইটি করে ডিম খেয়েছেন, তারা বাকি দুই দল থেকে ৬৫ শতাংশ বেশি ওজন ঝরিয়েছেন ও ৩৫ শতাংশ পেটের মেদ ঝরিয়েছেন।
ডিমে থাকা প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ রক্তে থাকা ট্রাইগ্লিসারিড লেভেল কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। যার জেরে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে।
প্রসবজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমায়:
একটি ডিমে ০.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন B9 থাকে, যাকে ফলিক অ্যাসিডও বলা হয়। গর্ভাবস্থায় শরীরে ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম হলে শিশুর সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ঠিক মতো তৈরি হয় না। ফলে নার্ভের রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বয়সকে ধরে রাখে:
বার্লিনের বিখ্যাত হেল্থ সেন্টার Charité-র গবেষণা বলছে, ডিম ত্বকের বলিরেখা পড়তে দেয় না। ফলে বয়স বৃদ্ধিজনিত ত্বকের সমস্যা কমিয়ে দেয়। চামড়ায় উজ্জ্বলতা আনে। ত্বকের ক্যান্সারও রোধ করে। চিকিত্সা বিজ্ঞানীদের মতে, ডিমের কুসুমে প্রাকৃতিক হলুদ রং থাকে। ওই রঙে প্রচুর পরিমাণ ক্যারোটেনয়েড থাকে। যা ত্বককে উজ্জ্বল করে।
ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়:
গবেষণায় দেখা গেছে, একটি ডিম স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ কমিয়ে দেয়। শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
ভালো রাখে চুল, ত্বক ও লিভার:
ডিমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন B12, বায়োটিন ও প্রোটিন থাকে। যা চুলের বৃদ্ধি ও চামড়ার জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে ডিমের কুসুম চুলের জন্য দারুণ উপকারী।
ভালো রাখে চোখ:
ডিমে থাকা প্রচুর পরিমাণ লিউটিন, ভিটামিন A ও zeaxanthin চোখের জন্য খুবই উপকারী। দিনের আলোয় চোখের উপর যে চাপ পড়ে, তা কমিয়ে দেয়। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
ওজন কমায়:
ডিম শরীরে ব্যাড ফ্যাট জমতে দেয় না। খিদের মাত্রা কমায়। গুড ফ্যাট ওজন ঝরাতে সাহায্য করে।
হজম ক্ষমতা বাড়ায় ও সুস্থ রাখে:
ডিমে থাকে choline, যা শরীরে মেটাবলিজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ফলে এনার্জি তৈরি হয়। ওজন ঝরে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রিম্যাচিওর বেবি হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
শরীরের হাড় মজবুত করে:
ডিমে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন D পরিমাণ বেশি থাকায়, হাড় ও দাঁত মজবুত করে। জয়েন্ট পেইন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।