বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে জাল ভাউচারে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ

 নজরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি:

স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সিরাজগঞ্জসহ আশেপাশের জেলার মানুষ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালটি সুনামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিয়ে আসছে।  চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্থলে রোগীদের প্রতিনিয়ত ডিজিটাল কায়দায় রশিদ ভাউচার জাল করে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে আলাউদ্দিন নামের এক যুবক। আলাউদ্দিন হাসপাতালের কেউ নন এমনটা কর্তৃপক্ষ দাবী করলেও কিছু কর্মকর্তা- কর্মচারীর যোগসাজসে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকার বাগবাটোয়ারী করা হয় বলে একাধিকসূত্রে জানা গেছে।

 তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন রশিদ কেটে ইসিজি ও ডায়াবেটিসের পরীক্ষা বাবদ ভুয়া রশিদ দিয়ে ফি নিচ্ছে। ডাক্তার পরীক্ষা লিখছে না, এমন কোন রোগী যদি ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা না করা হয়, তবে তার সাথে খারাপ আচারণ করা হয়। তবে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলেই ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। ইসিজি ৮০ টাকা ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা বাবদ ৫০ টাকা বাধ্যতামূলক নেওয়া হচ্ছে। মাসে প্রায় সরকারি রশিদ নয়, ভুয়া রশিদ কেটে প্রতিটি বিভাগ থেকে লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি একজন রোগী যদি ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয় তাকেও ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
আরো জানে যায়, ২০১৮ সালে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার সুকৌশলে ওষুধ কোম্পানীর নিকট থেকে থেকে ইসিজি মেশিন গ্রহণ করে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা করার পদ্ধতি চালু করা হয়। এতে ২০১৮ সাল থেকে ১০৯নং কক্ষে অবস্থিত সরকারি ইসিজি মেশিনে ও ব্লাড বিভাগে কেউ আর ডায়াবেটিকস পরীক্ষা করতে যায় না। এতে সরকারি ইসিজি ও ডায়াবেটিকস মেশিন ব্যবহার না হওয়ায় সরকার কোন রাজস্ব পাচ্ছে না ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভুয়া রশিদ দিয়ে ইসিজি ও ডায়াবেটিকস এর পরীক্ষা ফি বাবদ ওই টাকাগুলো গ্রহণ করে থাকে।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনকে রশিদের কিছু স্বচিত্র দেখালে তিনি বলেন, এই রশিদ ভুয়া। আগে এ ধরনের কাজ চলছে তবে এখন এগুলো দিয়ে ক্যামনে কি করে সেটি বলতে পারবো না। তবে এই রশিদে পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলাফল গ্রহন করে থাকি না।
 মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বরত জুনিয়র কনস্যানটেন্ট ডা: আলতাব হোসেন বলেন, আলাউদ্দিন মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়মিত আসেন না। তিনি ওয়ার্ডের কেউ নন। ভুয়া রশিদ দিয়ে অবৈধভাবে টাকা গ্রহন করেন কিনা সেটা আমার জানা নেই।  রশিদ ছাড়া টাকা গ্রহন করার বিষয় জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি এড়িয়ে যান।
এ বিষযে তত্ত্বাবধায়ক ডা:  রতন কুমার রায় বলেন, স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে কাজ করে আসছে আলাউদ্দিন। ভুয়া রশিদ ব্যবহার করে এ ধরনের কাজ মারাত্মক অপরাধ। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান আলাউদ্দিনকে কিভাবে রাখছে সেটি বলতে পারবো না। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular