ইসলাম ইহকাল ও পরকালের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করেছে। একজন মুমিন শুধু পরকাল নিয়ে পড়ে থাকবে, ইসলাম এটা চায় না। ইসলাম চায় প্রয়োজন অনুসারে ইহকাল ধারণ করে মানুষ পরকালমুখী হোক। ইসলাম কখনো দুনিয়াদারি বাদ দিয়ে শুধু ধর্মকর্ম করার নির্দেশ দেয় না। সমাজে দুর্বল হয়ে কোনো মুসলমান বসবাস করবে, এটা ইসলাম পছন্দ করে না। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘দুর্বল মুমিনের চেয়ে সবল মুমিন শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। তবে প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ আছে..।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৪)
তাই দুনিয়ায় এমনভাবে চলা যাবে না যে জালিম ও প্রভাবশালীরা তার সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। এজন্য নিজের অর্জিত সম্পদের সুরক্ষার জন্য সর্বাত্মক চষ্টো অব্যাহত রাখতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! যদি কেউ আমার সম্পদ ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হয় তাহলে আমি কী করব? রাসুল (সা.) বলেন, তুমি তাকে তোমার সম্পদ নিতে দেবে না।
লোকটি বলল, যদি সে আমার সঙ্গে এ নিয়ে মারামারি করে? রাসুল (সা.) বলেন, তুমি তার সঙ্গে মারামারি করবে। লোকটি বলল, আপনি কী বলেন! যদি সে আমাকে হত্যা করে? রাসুল (সা.) বলেন, তাহলে তুমি শহীদ হিসেবে গণ্য হবে। লোকটি বলল, আপনি কী মনে করেন, যদি আমি তাকে হত্যা করি? রাসুল (সা.) বলেন, সে জাহান্নামি। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৭)
শহীদ তিন ধরনের :
(২) ওই ব্যক্তি, যে আখিরাতে সাওয়াবের দিক দিয়ে শহীদ হবে। কিন্তু সে দুনিয়ার নির্দেশাবলীতে শহীদ হবে না। যেমন মহামারী বা পেটের অসুখে অথবা বাড়ি ধ্বসে কিংবা নিজের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেলে। এমন ব্যক্তিকে গোসল দিতে হবে এবং সালাতে জানাজাও পড়তে হবে। তবে এরা আখিরাতে শহীদের সওয়াব পাবে। তবে এটা জরুরি নয় যে এমন ব্যক্তি প্রথম প্রকারের শহীদদের সমতুল্য হবে।
(৩) ওই ব্যক্তি, যাকে দুনিয়ার নির্দেশাবলীর দিক দিয়ে শহীদ বলা হবে। তবে পরকালে শহীদের পুরোপুরি সওয়াব পাবে না। যেমন যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করেছে, কিন্তু গনিমতের সম্পদের ক্ষেত্রে খিয়ানাত করেছে। এ ধরনের লোক কাফিরদের সঙ্গে যুদ্ধ করার কারণে তাকে গোসল দিতে হবে না। জানাজার সালাত আদায় করবে না। কিন্তু আখিরাতে সে শহীদের পূর্ণ সওয়াব পাবে না। (শরহে নববী)
এভাবেই ইসলাম মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ সম্পদ রক্ষায় সদা তত্পর থাকার নির্দেশ দিয়েছে।