সম্প্রতি বেশ আলোচনায় থাকা সংক্রামক রোগ এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) নিয়ে বাংলাদেশে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যদিও দেশে এখনো কেউ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে শনাক্ত হয়নি।
এরপরও মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা গেলে সন্দেহভাজনদের দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬২৬৩ ও ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মাঙ্কিপক্সের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা, পিঠে ব্যথা, দুর্বলতা, ফোলা লসিকাগ্রন্থি ও ত্বকের ফুসকুড়ি বা ক্ষত।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে মধ্য আফ্রিকায় রোগটি বিস্তার লাভ করেছে।
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই রোগের লক্ষণগুলো অনুভব করলে বা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নিতে হবে।
বিশেষ করে ২১ দিনের মধ্যে এই রোগে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন, এমন কোনো দেশ ভ্রমণ করলে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার উপপরিচালক দাউদ আদনান ইউএনবিকে বলেন, ‘এমপক্স সংক্রমণ দেশে যাতে না ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিমানবন্দর, নৌপথ ও অন্যান্য প্রবেশপথে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য নির্দেশিকা জারি করা হবে। ’
ভাইরাসবাহিত রোগটির বিস্তার রোধে সরকারের দৃঢ় সংকল্পের কথা তুলে ধরে দাউদ আদনান এসময় বলেন, ‘কেউ যাতে এমপক্স নিয়ে দেশে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’
উল্লেখ্য, আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এমপক্স এই মহাদেশের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি দেশেও ছড়িয়ে পড়ছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, সুইডেন, কেনিয়া। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে এমপক্সে আক্রান্ত একজনকে শনাক্ত করেছে তারা। ভারতীয় উপমহাদেশে এবার এটিই প্রথম এমপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা।
অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বব্যাপী এমপক্স বিস্তার নিয়ে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্স একপ্রকার সংক্রামক রোগ। এর উপসর্গ অনেকটা জ্বর বা ফ্লুর মতো। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারেন।
ক্রমবর্ধমান এই প্রাদুর্ভাবের জন্য আফ্রিকান ইউনিয়নের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা তাদের নিজস্ব জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পরদিনই জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করেছিলো।