সংসদ থেকে ফাইল গায়েব নিয়ে উদ্বেগ

0
4

আর্থিক ও সংসদ সচিবালয়ের পুরনো সিদ্ধান্তের শতাধিক ফাইল গায়েব হয়ে গেছে। এসব ফাইলের বেশিরভাগই আর্থিক বিষয়ক। গায়েব হওয়া ফাইলগুলোর মধ্যে শতাধিকের মধ্যে কোটি টাকার হিসাব রয়েছে।

সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে ফাইল গায়েবের কাজে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা অফিসে নিয়মিত আসছেন না এবং বাইরে থেকে কর্মচারীদের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েব করছেন। অভিযোগ উঠেছে, স্পিকারের দপ্তর, সংসদ সচিবের দপ্তর এবং কমিটি শাখার অনেক ফাইল রাতারাতি গায়েব হয়ে যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির অন্তত ১০টি ফাইল গায়েব হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, বর্তমান সরকারের হাতে এসব ফাইল না পৌঁছানোর জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৪৮টি কমিটির বেশিরভাগই কোনো মিটিং করেনি, অথচ মিটিংয়ের নামে অর্থ বরাদ্দ এবং হাজিরার টাকা দেয়া হয়েছে। এ ধরনের বেশ কিছু ফাইল গায়েব হয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, ১২ অক্টোবর জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে ভারতে পালানোর সময় আটক করা হয়। এই ঘটনায় সংসদ সচিবালয়ের আরও কর্মকর্তারা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তারা দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করছেন।

সংসদ সচিবালয়ের একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী জানান, প্রতিদিন ফাইল গায়েব হচ্ছে এবং সচিবালয়ের ভেতর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অন্যদিকে, সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, অফিসের অবকাঠামো ও কাজের পরিবেশ নেই, যার কারণে কর্মকর্তারা আসছেন না।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, ফাইল গায়েব হলে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সৃষ্টি হবে এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।

এদিকে, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংসদ ভবনে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়, যা সংসদ সচিবালয়ের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।