ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী আশরাফুল আলম এর পারিবারিক সদস্যদের জমি দখল নিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা কন্যা মারিয়া আলম জ্যোতি ও নাতনী পুষ্পিতা তানিশাকে মারপিট করে জখম ও শ্লীতহানির অভিযোগে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ এর ১০/৩০ ধারায় যৌনপীড়ন ও সহায়তা করার অপরাধে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের করায় বিপাকে পড়েছে। আসামীগণ মামলা তুলে নিয়ে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাদীপক্ষ। শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, অভিভাবকহীন নিরীহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্পত্তি দখলের চেষ্টাকালে আসামীগণ বাড়ির মহিলাদের মারপিট ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে অজ্ঞাত আসামীসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে ২১ ডিসেম্বর মামলা দায়ের হয়েছে। পলাতক আসামীগণ মামলা তুলতে বাদীপক্ষের উপর বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টির মৌখিক অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, পৌরসভাধীন কাজীপাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী আশরাফুল আলম ১৪-০৮-২০০৪ইং তারিখে তাঁর কন্যা শারমিন আক্তার তানিয়াকে ৫ শতক জমি দান করেন। শারমিন আক্তার পূর্বে ১নং আসামীর স্ত্রী ছিলেন কিন্তুু ০৯-০২-২০১২ইং তারিখে শৈলকুপা পৌরসভার কাজী অফিসে বৈধ তালাকের মাধ্যমে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উক্ত দম্পত্তিদের পুনরায় সংসার করার সমঝোতা বৈঠকের মধ্য দিয়ে শারমিন আক্তার এর নিকট থেকে ০৪-০২-২০১৪ইং তারিখে ২শতক জমি অভিযুক্ত শাহীন আক্তার এবং ২ শতক তার কন্যা পুষ্পিতা তানিশার নামে হেবা দলিল সম্পাদন করেন।
উক্ত দলিল সম্পাদনের পরপরই সালিশী শর্ত ভঙ্গ করে শাহীন আক্তার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় অন্য মেয়েকে বিবাহ করায় বিপত্তি দেখা দেয় সেই থেকে শারমিন আক্তার উক্ত দানপত্র দলিল বাতিলের চেষ্টা করে। যেহেতু দলিল সম্পাদনের ২ বছর আগেই ডিভোর্স হয়েছে সে কারনে উক্ত দলিলে কোন আইনী বৈধতা নেই বলে শারমিন আক্তার নিজস্ব সম্পত্তি দখলে নিয়েছে। তিনি আরো জানান, ভবনটিতে এক সময় শৈলকুপা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয় ছিল যা গত বছর স্থায়ীভাবে ক্লাবের নিজস্ব জায়গা কবিরপুর চলে গেছে, তবে পূরনো অস্থায়ী কার্যালয়ের দেওয়ালে সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ওই ভবনের একটি কক্ষে পুলিশের তালিকাভুক্ত শিবির সংগঠক ও নামধারী সাংবাদিককে রুম ভাড়া দিয়ে অবৈধভাবে প্রেসক্লাবের নামে ভবন দখলের চেষ্টা করে। ভবনের মালিকানা নিয়ে বিতর্ক ওঠায় এক বছর আগেই শৈলকুপার গণমাধ্যমকর্মীরা ভবন ছেড়ে দিলেও শাহীন আক্তার ক্লাবের ব্যানারটি ঢাল হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে। গত ২১ ডিসেম্বর ভবন মালিক শারমিন আক্তারের ছোট বোন ও তার মেয়েকে মারপিট ও শ্লীতাহানী ঘটিয়ে বাড়ি দখলের চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ হামলাকারীদের ধাওয়া করলে সবাই পালিয়ে যায়। আসামী ধরপাকড়েরর চেষ্টা করছেন বলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান। তবে বাদী শারমিন আক্তারের অভিযোগ, মামলার পর থেকেই আসামীগণ তার পরিবারের উপর বিভিন্ন মাধ্যমে দেখে নেওয়ার হুমকি-ধামকি দেখিয়ে মামলা তোলার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন জানান, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্পত্তি দখলের চেষ্টাকালে আসামীগণ বাড়ির মহিলাদের মারপিট ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে জরিপ বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও ক্লিনিক ব্যবসায়ী শাহীন আক্তার, ওয়ালিউল্লাহ ওলি, মনোজ কুমার ও রতনসহ অজ্ঞাত মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।