চুয়াডাঙ্গা শহরজুড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান উদ্বোধন করলেন ডিসি নজরুল ইসলাম সরকার
পরিচ্ছন্নতায় অংশ নিলেন এসপি জাহিদ-কৃতী ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার-মেয়র জিপু চৌধুরী
নিউজ ডেস্ক:‘শহর আমাদের, পরিষ্কার রাখার দায়িত্বও আমাদের’ প্রতিপাদ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকরণ অভিযান শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার যৌথ আয়োজনে গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে বড়বাজার শহীদ হাসান চত্বরে এসে শেষ হয়। এ সময় শহর পরিষ্কার রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেখানে লিফলেট বিতরণ, ডাস্টবিন স্থাপন এবং ধুলোমুক্ত করতে শহরজুড়ে পানি ছিটানো হয়।
পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকে যদি মনে করি, একটি সুন্দর শহরে বাস করতে চাই, তাহলে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা নিজ দায়িত্বে নিজেদের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করলে শুধু পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পরিষ্কার করতে পারবেন না।’
অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশে সিগারেটের ফিল্টার রাস্তায় পাবেন না। কারণ, ওই দেশের নাগরিকেরা দায়িত্ববান। যত্রতত্র ময়লা না ফেলি, তাহলে আমরা পরিষ্কার শহর দেখতে পাব। কাপড়-চোপড় পরে শরীর পরিষ্কার রাখলে হবে না। যে শহরে বসবাস করি, সেই শহরটাকেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানকে আন্দোলন হিসেবে নিতে হবে। রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার করে পানি ছিটিয়ে দেবে পৌরসভা। পৌরসভা তাদের দায়িত্ব পালন করবে, সেই সঙ্গে নাগরিকেরাও তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। তাহলেই চুয়াডাঙ্গা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার পাশে শহরের বিল্ডিংয়ের রঙ পাল্টে দিতে পারেন মেয়র। বিশ্বকাপের সময় রাজধানী ঢাকায় বাড়ির রঙ পরিবর্তন করা হয়। যারা এই শহরে আসবেন, তাঁরা চমকে যাবেন। ভারতের একটি শহরের বাড়িগুলোতে পিঙ্ক রং করা হয় ব্রিটিশ রানীর আগমন উপলক্ষে।’
এ কর্মসূচি প্রসঙ্গে পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, ‘পৌরবাসীকে কীভাবে ভালো রাখা যায় এবং ধুলোমুক্ত রাখা যায়, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয় আমাকে নিয়ে বসেছিলেন। ময়লা প্রতিদিন পরিষ্কার করার চেষ্টা করি। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের আন্তরিক চেষ্টায় এবং পৌরবাসী সহযোগিতায় আমরা শহর পরিষ্কার রাখতে পারব।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাইরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান, ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আহসান হাবিব, প্যানেল মেয়র মুন্সী রেজাউল করিম খোকন, কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম মালিক, জাহাঙ্গীর আলম, নাজরিন পারভীন মলি, গোলাম মোস্তফা শেখ মাস্তার, সিরাজুল ইসলাম মনি, শাহীনা আক্তার রুবি, সুলতানা আরা বেগম, শেফালী খাতুন, নির্বাহী প্রকৌশলী আয়ুব আলী বিশ্বাস, পৌর সচিব কাজী শরিফুল ইসলাম, সহকারি প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান, স্যানেটারি ইন্সপেক্টর নার্গিস জাহান, টিকাদান সুপারভাইজার আলী হোসেনসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গভীর রাতে ঝাড়– হাতে পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর সঙ্গে কার্যক্রমে অংশ নেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ঝাড়–-ব্যালচা হাতে নিয়ে পৌরসভার সামনের সড়ক থেকে শুরু করে শহীদ হাসান চত্বর হয়ে কোর্ট মোড় পর্যন্ত সড়ক ও সড়কের দুপাশের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেন। এতে অংশ নেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হুসাইন জ্যাকি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য গাজী ইমদাদুল হক সজলসহ জেলা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী।
রাত ১১টার দিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিআইপি দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড (বিডি) লিমিটেডের পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপনুল হাসান, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, র্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের অধিনায়ক মাসুদ আলম, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের উপপরিচালক জি এম জামিল সিদ্দিক, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান, ডিআইও-১ মাহাবুর রহমান প্রমুখ।