নিউজ ডেস্ক:
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উঠাচ্ছেন যোসেফ ক্রাউলি। তিনি মার্কিন কংগ্রেসে ডেমক্র্যাটিক ককাসের চেয়ার এবং কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ার কংগ্রেসম্যান।
বিলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীসহ বিভিন্ন গ্রুপের বর্বরতায় গভীর উদ্বেগ এবং এহেন মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি থেকে বিরাট এ জনগোষ্ঠিকে রক্ষায় দাবি করা হবে।
এ নিয়ে ইতিমধ্যেই তার সহকর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বাংলাদেশীদের বন্ধু যোসেফ ক্রাউলি। এ সময় তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন এবং বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান অসহায় মানুষদের আশ্রয় দেয়ার জন্যে।
‘তবে রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে অবিলম্বে ফিরে সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে জীবন-যাপনে সক্ষম হন-এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে আরো সোচ্চার হওয়া দরকার’-মন্তব্য করেন কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলি।
৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের রিচমন্ড হিলে রিচি রিচ প্যালেসের এ অনুষ্ঠানে ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে বাংলাদেশ কম্যুনিটির নেতারাও ছিলেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু উত্থাপন করেন অনুষ্ঠানের কো-চেয়ারপার্সন কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী এবং অপর ডিস্ট্রিক্ট লিডার মোহাম্মদ আমিনুল্লাহ, স্টেট কমিটিম্যান তাজ রাজকুমার প্রমুখ। এ সময় কম্যুনিটি লিডার গিয়াস আহমেদ, নার্গিস আহমেদ, এটর্নী সোমা সাঈদ, হাসানুজ্জামান হাসান এবং ওসমান চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
তারা ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গার আগমন ঘটায় বাংলাদেশ আরো বেশী সমস্যায় নিপতিত হয়েছে বলে কংগ্রেসম্যানকে অবহিত করেন এবং অবিলম্বে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
একইদিন দুপুরে ওয়াশিংটন ডিসিতে এক টেলি-প্রেস কনফারেন্সে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক উপ-সহকারি মন্ত্রী প্যাট্রিক মার্ফি আবারো বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রাণের ভয়ে নিজ জন্মভূমি ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। শত সমস্যার মধ্যেও বাংলাদেশের সরকার ও জনসাধারণ তাদের নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা করেছেন।
এ প্রেস কনফারেন্সে এক প্রশ্নের জবাবে উপ-সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পুনরায় কোন ধরনের অবরোধ আরোপের পরিকল্পনা এখনও গ্রহণ করার কথা ভাবছে না যুক্তরাষ্ট্র। পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতেই উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ অবসানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যেই মিয়ানমার সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা শুরু করাও হয়েছে। একইসাথে রোহিঙ্গা এবং রাখাইন স্টেট সম্পর্কিত যাবতীয় ইস্যুতে সম্পৃক্ত নিকট প্রতিবেশীরাও আলোচনা করছেন। বিশেষ করে দেশত্যাগে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানকারি বাংলাদেশকেও পাশে রাখা হয়েছে এসব আলোচনায়।
কারণ, মিয়ানমারের এ সমস্যা নতুন নয়, বহুদিনের সমসা। সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে দায়িত্ব নেয়া নতুন সরকারেরও অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই সমস্যার সমাধান করা। বার্মাকে গণতন্ত্রে উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে এবং একইসাথে উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ অবসানে কার্যকর আলোচনাও চালিয়ে যেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র’-উল্লেখ করেছেন উপ-সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।