রোববার (৩০ জুন) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ও সার্জন ডা. জাবেদ আক্তার।
তিনি জানান, ওপেন সার্জারির পাশাপাশি এখন মানবদেহে ছোট ফুটা করে ল্যাপারোস্কপি সার্জারি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু ল্যাপারোস্কপি সার্জারির কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। রোবটিক সার্জারিতে অপারেশনের স্থান ভালো ও স্পষ্ট দেখার জন্য এখানে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন থ্রিডি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরও জানান, সার্জারিতে বিশ্বের ৯৩ ভাগ রোবট ব্যবহার করা হয় আমেরিকা, ইউরোপ ও জাপানে এবং পৃথিবীর বাকি দেশে মাত্র ৭ ভাগ রোবট ব্যবহার করা হয়।
ডা. জাবেদ আক্তার বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো রোবট নাই। তবে বাংলাদেশ প্রস্তুত রোবটের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষভাবে সহযোগিতা প্রয়োজন। রোবটিক অপারেশন বাংলাদেশে শুরু হলে, বাংলাদেশের জনগণ জটিল রোগীর চিকিৎসা পেতে পারে এবং বিদেশমুখী প্রবণতা কমতে পারে।
তিনি বলেন, ওপেন ও ল্যাপরোস্কপি অপারেশনের চেয়ে, বিশেষ করে জটিল ও সংকীর্ণ স্থানে অপারেশন করতে অনেক সুবিধা সংযুক্ত করা হয়েছে। এখানে অপারেশন সংক্রান্ত জটিলতা, রক্তপাত ৩৯ শতাংশ ইনফেকশন কম হয়। এই অপারেশন শুরু হলে রোগীর কম ব্যথায়, কম রক্তপাত ও কম ইনফেকশন হবে। এখানে সার্জন দূরে বসে অপারেশন সাকসেস করবেন। এখানে সার্জন নিজ আঙ্গুলে রোগীর অপারেশন করবেন। ওপেন কিংবা ল্যাপরোস্কপি হোক না কেনো বিশেষ করে জটিল ও সংকীর্ণ স্থানে অপারেশন করতে অনেক সুবিধা। আগামী ৬ মাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম চালু হবে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে রোবটিক সার্জারিতে দেহের অপ্রশস্ত ও জটিল স্থানে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হবে। এতে করে ইউরোলজি, গাইনোকলজি, ক্লোলোরেকটাল সার্জারি, হেপাটোবিলিয়ারি ও অ্যাবডোমিনাল ওয়াল রিকন্সট্রাকশন সার্জারি সহজ হবে এবং সার্জনদের শতকরা ৭০ ভাগ কাজের চাপ কমবে।
রোবটিক সার্জারির মাধ্যমে খরচ বেশি হলেও অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত জটিলতা, রক্তপাত ও সংক্রমণের হার কমে আসবে। দেশের তরুণ সার্জনদের রোবটিক সার্জারি বিষয়ে ফেলোশিপ করাসহ রোবটিক সার্জারিতে উদ্বুদ্ধ করতে আগামী ৫ জুলাই রংপুরে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক হৃদয় রঞ্জন রায়, অধ্যাপক আয়েশা নাসরিন সুরভী, ডা. আহসানুর রহমান, ডা. মিজানুর রহমান।