নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। দেশটিতে প্রায় ১৫ লক্ষ বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছেন। রাজধানী রিয়াদ এবং এর আশপাশে ৬/৭ লক্ষ বাংলাদেশির বসবাস, যাদের অধিকাংশই সিলেট এবং চট্রগ্রামের বিভাগের নাগরিক। এছাড়া ঢাকায় যানজট এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নানা রকম হয়রানির শিকার হওয়ায় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ ওই অঞ্চলের প্রবাসীরাও অনেক সময় ব্যবহার করেন চট্রগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কিন্তু সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে সিলেট এবং চট্রগ্রামের নেই কোন সরাসরি ফ্লাইট।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বর্তমানে ঢাকা-রিয়াদ-ঢাকা রুটে বিমানের যে যাত্রী সংকট আছেন সপ্তাহে অন্তত একটি করে ফ্লাইট চট্রগ্রাম এবং সিলেটে দিলে সেই সংকট কেটে লাভজনক অবস্থায় যেতে পারবে রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থাটি।
এমনকি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে সিলেট এবং চট্রগ্রামে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবি জানিয়েছেন রিয়াদে বসবাসরত ওই অঞ্চলের প্রবাসীরা।
প্রবাসীরা জানান, রিয়াদে বসবাসকারী প্রবাসীদের হিংসভাগই সিলেট, চট্রগ্রাম এবং এর আশপাশের। কিন্তু রিয়াদ থেকে তাদের দেশে যাওয়া আসার কোন সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় ট্রানজিট বিমানে ভ্রমণ করতে হয়। তারা বলেন, এতে করে একদিকে যেমন অর্থের অপচয় হয়, অন্যদিকে ট্রানজিট ফ্লাইট অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
সৌদি আরব প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বশির বলেন, রিয়াদ থেকে সিলেট এবং চট্রগ্রামে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি ফ্লাইট না থাকা এবং ঢাকা বিমানবন্দরে হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে প্রবাসীরা বাধ্য হয়ে বিদেশি এয়ারলাইন্সে দুবাই, আবুধাবী, কুয়েত, কাতার, ওমান হয়ে সিলেট বা চট্রগ্রাম ফেরেন। এতে করে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি প্রবাসীরা বিদেশি এয়ারলাইন্স নির্ভর হয়ে পড়ছেন।
যাত্রী ছাড়াও সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ কার্গো। বিদেশ থেকে পাঠানো কার্গোর মালামাল ঢাকা হয়ে সিলেট/চট্রগ্রামে পাঠানো যেমন অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়, তেমনি সময়ও লাগে অনেক বেশি। এক্ষেত্রে সিলেট চট্রগ্রামে সরাসরি ফ্লাইট হলে ওই অঞ্চলের মানুষেরা কার্গোতে মালামাল পাঠাতে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।
বাংলাদেশি পণ্য আমদানীকারক সমিতি রিয়াদের সভাপতি কাপতান হোসেন বলেন, রিয়াদ থেকে সিলেট এবং চট্রগ্রামে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্রগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থাকা সত্ত্বেও রিয়াদ থেকে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় এ অঞ্চলের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে ঢাকা থেকে ট্রানজিট ফ্লাইটে সিলেটে যেতে কখনও ৭/৮ ঘণ্টা, আবার অনেক সময় একদিন হোটেলে রেখে তারপর ফ্লাইট দেয়া হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রিয়াদ রিজিওনাল ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন বলেন, চট্রগ্রাম এবং সিলেট থেকে সরাসরি রিয়াদে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আমরা ঢাকায় দু’টি চিঠি দিয়েছি। এই রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে যাত্রী যেমন বাড়বে সেই সঙ্গে বাড়বে কার্গোও।