ডেস্ক রিপোর্ট :
বাংলাদেশে প্রবর্তিত বিশ্ব সমাদৃত ত্বরিকায়ে মাইজভান্ডারীয়া’র প্রবর্তক গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্সূফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর ১১৯ তম বার্ষিক উরস শরিফ উপলক্ষে মাইজভান্ডারী একাডেমির আয়োজনে সপ্তদশ শিশু-কিশোর সমাবেশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দিনব্যাপী চট্টগ্রাম মহানগরীর নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।সকাল ১০ টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে শিশু–কিশোর সমাবেশের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন। এরপর কুরআন মজিদ থেকে তিলাওয়াত, না’তে রাসূল (দ), মাইজভাণ্ডারী সঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়। প্রজাপতি কোথায় পেলে এমন রঙিন পাখা, চল্ চল্ চল্… ফেরদৌস আরার সুরেলা মোহনীয় কণ্ঠে পরিবেশিত কয়েকটি নজরুল সঙ্গীত শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে শোনেন। সমাবেশে ক্বিরাত, হামদ্–না’ত, মাইজভাণ্ডারী সংগীত, নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, উপস্থিত বক্তৃতা, ফটোগ্রাফি, রচনা, চিত্রাংকন, স্পেলিং বি, আইডিয়াহান্ট, সূফি অলিম্পিয়াড ও সীমিত চলচ্চিত্রসহ ১৯টি বিষয়ে চার সহস্রাধিক শিশু–কিশোর অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।
সমাবেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন মাইজভান্ডার শরিফ গাউছিয়া হক মঞ্জিলের সাজ্জাদানশিন রাহবারে আলম হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভান্ডারী। তিনি বলেন, ‘আকাশায়নের এ যুগে গতানুগতিক ধারা এড়িয়ে চলে উত্তম কাজে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি আজ বড় প্রয়োজন। আধুনিক মানুষের মন চায় একটি দূষণমুক্ত পৃথিবী, দূষণমুক্ত অন্তর। উত্তম ইচ্ছা নিয়ে ভালো কাজে প্রতিযোগিতার মনোভাব জাগ্রত করতে হবে এবং ভালো কাজে শিশু-কিশোরদের উৎসাহিত করতে হবে।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, শিশু-কিশোরদেরকে নৈতিক মানবিক, সৎ, নীতিবান ও বিজ্ঞানমুখী প্রজন্ম হিসেবে গড়তে পারলে তারাই আগামী দিনে দ্যুতি ছড়াবে। মিথ্যা বলা মহাপাপ। কিন্তু আমরা মিথ্যা কথা বলা ছাড়তে পারি না। অনেকেই নামাজ কালাম পড়েন, ধর্মে কর্মেও এগিয়ে থাকেন। অথচ এদের কেউ কেউ আবার ব্যবসার নামে প্রতারণা ও ভোক্তাদের ঠকান। এই বিপরীতমুখী মানসিকতা আমাদের ছাড়তে হবে।
শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এমডি জাফরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিশু–কিশোর সমাবেশে অতিথি ও আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, রাজনীতিবিদ ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ও গবেষক নজরুল গবেষণা ট্রাস্টের সদস্য ফেরদৌস আরা, মাইজভাণ্ডারী একাডেমির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ডা. সাইফুদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র সহকারী সচিব এস এম অনিক চৌধুরী। আরেফিন রিয়াদের সঞ্চালনায় এই সময় উপস্থিত ছিলেন সপ্তদশ শিশু–কিশোর সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক এইচ এম রাশেদ খান, উপদেষ্টা মাকসুদুর রহমান হাসনু, নুরুল করিম নুরু, সমন্বয়ক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ তরিকুল আলম, এইচ আর মেহবুব জিকো, আবুল মনছুর, আশরাফুজ্জামান আশরাফ, নাছির উদ্দিন, রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন, মেজবাহ উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন সিদ্দিকী, বিপ্লব দে (পার্থ),মোহাম্মদ ওমর ফারুক,আহসান উল্লাহ চৌধুরী বিভন, মো.আরিফুল ইসলাম, আসিফ আহমেদ সাফায়েত, শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর হোসাইন, তাজকিয়ার সভাপতি ডা. কৌসিক সাইমন শুভ, জয়নাল আবেদিন জয়, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয়নাল আবেদিন প্রমুখ।
সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এই ধরনের সৃজনশীল মননধর্মী আয়োজন তাদের মানস চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখবে। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এ ওয়াই এমডি জাফর বলেন, মাইজভান্ডারী ত্বরিকা একটি জীবনঘনিষ্ঠ মানবিক ত্বরিকা। মাইজভান্ডার দরবার শরিফ সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের মিলনকেন্দ্র।