বিশেষ প্রতিনিধি: ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি বা সমঝোতা দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকালে শেরে বাংলানগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবদনের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি,সরকার যেটা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবচেয়ে উচ্চতম পর্যায়ে রয়েছে। সম্পর্ক উচ্চতম পর্যায়ে যদি থাকে, তাহলে এ ধরণের প্রতিরক্ষা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি বা সমঝোতা কোনোটাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রবিরোধী কোনো চুক্তি বা সমঝোতা দেশের জনগণ মেনে নেবে না।’
মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সদ্য কারামুক্ত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলকে নিয়ে সাড়ে ১১টায় শহীদ জিয়ার মাজারে আসেন।
মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এ কর্মসূচিতে আরও অংশ নেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আজিজুল বারী হেলাল, মহানগরের কাজী আবুল বাশার, ইউনুস মৃধা, মো. মোহন, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের আকরামুল হাসান প্রমুখ।
গত ২৩ মার্চে উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে হাবিব উন নবী খান সোহেল কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। গত বছরের ৯ অক্টোবর নাশকতার বিভিন্ন মামলায় ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে সোহেলকে কারাগারে প্রেরণ করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সম্ভাব্য চুক্তি বা সমঝোতার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর উপলক্ষে ইতিমধ্যে আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের সমস্যাগুলো তার মধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে তিস্তা নদীর পানি সমস্যার সমাধান করা অর্থাৱ ন্যায্য হিস্যা পাওয়া, ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা পাওয়া, আমাদের সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে তার নিরসন হওয়া এবং ট্যারিফ-নন-ট্যারিফ বিষয়ে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে বাধা রয়েছে,সেই বাধাগুলো অপসারিত করা। এগুলো বাংলাদেশের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই সমস্যাগুলোর যদি সমাধান না হয়, তাহলে শুধুমাত্র ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি অথবা সমঝোতা কোনটাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সবসময় শুধু প্রতিবেশী দেশের কাছে নয়, সমগ্র গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে প্রত্যাশা করে যে, গণতন্ত্রকে এখানে ফলপ্রসূ করতে, জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে দিতে, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে গণতান্ত্রিক বিশ্ব তার ভূমিকা পালন করবে।