নিউজ ডেস্ক:
বৈশাখ আসতে না আসতেই শুরু হয়ে গেছে বৃষ্টির আবহ। হঠাৎ বৃষ্টি সঙ্গী হতে পারে যেকোনো দিন। এছাড়া পুরোদস্তুর বৃষ্টির মৌসুম শুরু হবে মাস দুয়েকের মধ্যে। ফলে মেঘলা আকাশ, ভেজা মাটি আর কর্দমাক্ত রাস্তাঘাট হবে আমাদের নিত্য সঙ্গী। তবুও কি জীবন থেমে থাকে!
না, বরং চলতেই থাকবে আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম। বৃষ্টির আবহ যে আমাদের জীবনে একটুও বৈচিত্র আনবে না, তা নয়। তবে বৈচিত্রের রেশ ধরেই তো আমাদের প্রত্যেকটি দিন হচ্ছে আরো সুন্দর। আর এই বৃষ্টি দিনেও সেই সৌন্দর্য ধরে রাখতে কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া খুবই জরুরি। বৃষ্টির এই মনমরা একঘেয়ে দিনগুলোতে একটু সচেতন হলেই আপনি থাকবেন সতেজ। ধরে রাখতে পারবেন নিজের ফ্যাশন সচেতনতা এবং ভাবমূর্তি।
বৃষ্টি দিনের পোশাক
রৌদ্র ঝলমল আকাশ দেখতে দেখতেই নেমে আসতে পারে বৃষ্টি। তাই এই মৌসুমে এমন পোশাক নির্বাচন করা উচিত যেন রোদ-বৃষ্টি দুটোতেই মানিয়ে যায়। তবে বৃষ্টির দিনে একটু রঙিন পোশাক ব্যবহার করতে পারেন। এতে যেমন সাদা পোশাকের তুলনায় নোংরা ভাবটা কম হবে, তেমনি পোশাকে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার আপনার মনে আনবে উচ্ছ্বাস।
এ সময় অবশ্যই সুতার কাপড় পরবেন। এতে পোশাক বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে জর্জেট, শিফন টাইপের পোশাক নির্বাচন করতে পারেন। মনে রাখবেন বর্ষা মানে কিন্তু স্টাইল বদল নয়, বরং বদলে ফেলুন ফ্যাব্রিক্স।
ছাতা
বৈশাখের ঝড়বাদলের দিনে জনজীবনের অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে, ছাতা। বৃষ্টির দিনে ছাতা ছাড়া কি যে বিড়ম্বনা, তা যে ভোগ করেছে, শুধু সেই জানে। তাই এই সময়টিতে রোদ বা বৃষ্টির জন্য অবশ্যয় একটি ছাতা সঙ্গে রাখুন। ছাতা পছন্দের বিষয়টিও করতে পারেন আপনার পোশাকের বিষয়টি মাথায় রেখে। অর্থাৎ একটু রঙিন।
বাজারে এখন সাদা-কালো ছাতা ছাড়াও প্রচুর পরিমানে রঙিন ফ্যাশনেবল ছাতা পাওয়া যায়। আর তার মধ্য থেকেই খুঁজে নিতে পারেন আপনার প্রিয়টি। আর অবশ্যই একটি ছাতা দিয়ে দিন আপনার ছোট্ট সোনামণির স্কুল ব্যাগেও। তবে সেটিও যেন তার মনের মতো এবং একটু ছোট হয়।
বৃষ্টি দিনের জুতা
আপনি হাঁটছেন, রাস্তার কাদা আপনার জুতায় লেগে যাচ্ছে। জুতায় লাগা কাদা ছিটে লাগছে জামাকাপড়ে। সারা দিন আপনাকে কিন্তু বাড়তি বিড়ম্বনাটুকু নিয়েই কাটাতে হবে। তাই বৃষ্টির এই সময়টায় বেছে নিন ঝড়-বৃষ্টি-কাদার দিনের বিশেষ উপযোগী জুতা।
এই সময়টাতে প্লাস্টিক বা পানি নিরোধক স্যান্ডেলই হবে জুতসই। এ সময় স্লিপার না পরে একটু উঁচু স্যান্ডেল পরাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এতে করে হাঁটতে গেলে কাদা ছিটবে না। এ সময়ের উপযোগী নানা নকশার ফ্যাশনেবল জুতা বাজারে রয়েছে। রাজধানীর প্রায় সব বাজারেই পাওয়া যাবে বৃষ্টিতে পরার উপযোগী ফ্যাশনেবল স্যান্ডেল।
বাচ্চাদের জন্য রাবারের জুতা খুবই মানানসই। তাদের বিভিন্ন রঙের রেইনবুট কিনে দেওয়া যায়। বড়রা অবশ্য প্রোটেকট্যান্ট ট্রিটেড চামড়ার জুতা পরতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে এমন স্যান্ডেল বা জুতা পরা যাবে না, যা ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারে না অথবা পিছলে যায়।
রেইনকোট
মোটরসাইকেল বা স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে একটা ছাতা ব্যাবহারের থেকে অবশ্যয় রেইনকোট বেশি সুবিধার। তাই যারা রেইনকোট পরতে অভ্যস্ত, তারা খুঁজে নিন রঙিন একটি পছন্দের রেইনকোট। এছাড়া রেইনকোট পরলে নষ্ট হবার ভয় থাকবে না আপনার পোশাকও।
ব্যাগ
বৃষ্টির সময় সাধারণ ব্যাগের পরিবর্তে ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ ব্যবহার করা বেশি জরুরি। কেননা এই ব্যাগেই লুকিয়ে থাকে অফিসের বিভিন্ন ফাইল, শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ বই, ক্যামেরা, ল্যাপটপসহ আরো অনেক কিছু। তাই ব্যবহার করতে পারেন প্লাস্টিকের একটু বড় ব্যাগও। ছাতা বা রেইনকোট বহনের জন্য বড় ব্যাগ প্রয়োজন। এখন প্লাস্টিকের সুন্দর সুন্দর ব্যাগ পাওয়া যায়, যা আপনার বেশভূষাকে আরো আকর্ষণীয় করবে।
সাজ
বৃষ্টির দিনে মেয়েদের সাজে পূর্ণতা আনে ফুল। মেয়েরা সে ক্ষেত্রে আলতো খোঁপা করে চুলে লাগাতে পারেন কৃষ্ণচূড়া, রঙ্গন অথবা দোলনচাঁপা। চুল যদি ছোট হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে হাতে জড়িয়ে নিতে পারেন বেলী ফুলের মালা। শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে কপালে পরে নিন একটি টিপ। কথা দিচ্ছি, অন্যদের নজর আপনার দিকেই থাকবে।
আর ছেলেরাও শার্ট অথবা পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে হাতে পরতে পারেন একটি সুন্দর ঘড়ি।