বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

বিনা টেন্ডারে সরকারী গাছ বিক্রির অভিযোগ!

জীবননগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে

নিউজ ডেস্ক:জীবননগর পৌরসভার সুবলপুর গ্রামের ৩০নং সুবলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুলের মূল্যবান গাছ সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে রাতের আধারে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী ও সচেতন অভিভাবক মহলের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দাবি গাছ কেটে স্কুলের চেয়ার টেবিল বানানো হবে। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্যদের পাশ কাটিয়ে বিনা টেন্ডারে রাতের আধারে গাছ কেটে গাছের গোড়া মাটি দিয়ে ঢেকে রাখায় তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জীবননগর সুবলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জনশূন্য এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় স্কুলটি শিক্ষকদের ইচ্ছা অনিচ্ছায় পরিচালিত হয়। অন্য দিকে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ থাকলেও তাদের কার্যক্রম একেবারে দায়সারা মত হয়ে পড়েছে। ফলে স্কুলের পরিবেশ ও শিক্ষার মান একেবারেই নি¤œমানের। অভিযোগ উঠেছে স্কুলের শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ের পরে স্কুলে আসেন এবং আগে ভাগেই চলে যান। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা বনে যাওয়ায় দুজন পরস্পর স্কুলের সম্পদ লুটপাট করে আসছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ তাদের অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতেহার ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তাদেরকে থানা পুলিশে দেয়ার হুমকি দেয়।
এদিকে, একইভাবে তারা শুক্রবার রাতের আধারে স্কুল চত্বরে থাকা তিনটি মেহগনি ও দুটি শিশু গাছ কেটে রাতের আধারেই অজ্ঞাত স্থানে পাঠিয়ে দেয়। তবে একটি শিশু গাছ এখনো সেখানে পড়ে আছে। দাবি উঠেছে কর্তন কার গাছগুলোর মূল্য আনুমানিক দেড় লাখ টাকা হবে। ঘটনাস্থল থেকে গাছ অপসারণের পর গাছের গোড়া মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ একইভাবে তারা গতবছরও স্কুলের একটা বড় তেঁতুল গাছ কেটে বিক্রয়কৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এব্যাপারে পৌর কাউন্সিলর আপিল মাহমুদ বলেন, আমি স্কুল কমিটির একজন সদস্য। তবে এ গাছ কাটার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এমনকি গাছ কাটার ব্যাপারে আমাকে কোনকিছু জানানো হয়নি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতেহার বলেন, জমি পরিমাপের পর স্কুলের আঙ্গিনায় লাগানো গাছ অন্যের জমির মধ্যে বের হওয়ার কারনে গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। কর্তনকৃত গাছ দিয়ে স্কুলের চেয়ার টেবিল তৈরি করা হবে। তবে রাতের আধারে গাছ উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া ও গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি।
এ ব্যাপারে সুবলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুরাইয়া বিলকিস বলেন, গাছের ব্যাপারে টেন্ডার হইনি তবে টেন্ডার হবে। গাছ কেটে অপসারণের পর টেন্ডারের কোনো নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনারা হয়-নয়-ছয় কিছুই লিখবেন না। আপনারা সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে স্কুলে গেলেই আপনাদের উত্তর পেয়ে যাবেন।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারী স্কুলের গাছ বিনা টেন্ডারে কাটার কোনো সুযোগ নেই বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। আমি বিষয়টি অন্য এক মারফতে শুনতে পারি এবং স্কুলে সন্ধান করলে তারা জানায় স্কুলের লাগানো গাছ অন্যের জমিতে চলে যাওয়ায় গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা বলেন, সুবলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটার ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বলেছি। এদিকে রাতের আধারে স্কুলের গাছ কেটে বিক্রি করায় এলাকবাসীর মধ্যে একটি টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে যে কোন সময় হতে পারে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular