নিউজ ডেস্ক:
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বর্তমানে ভিন্নতর উচ্চতায় পৌঁছেছে।
তিনি শুক্রবার বিকেলে ভারতের কলকাতায় ৩০তম ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ও ভারত পারস্পরিক সহযোগিতার গতিশীল একটি পর্যায়ে উপনীত হয়েছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তায় দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
এ সম্পর্ক গতিশীল রাখতে দু’দেশের সরকার ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বাড়ানোর ওপরও তিনি গুরুত্ব প্রদান করেন।
আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘সম্ভাবনার প্রতি হ্যাঁ বলুন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
ভারতের বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ডেভেলপমেন্ট কমিশনার (হ্যান্ডিক্রাফ্ট) এবং জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প কর্পোরেশনের (এনএসআইসি) সহায়তায় ঐতিহ্যবাহী দ্যা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএনসিসিআই) এ মেলা আয়োজন করেছে।
আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে। সরকার প্রযুক্তিনির্ভর সবুজ শিল্পায়নের ধারা জোরদারে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের প্রতি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ প্রণোদনা ও সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর শিল্প উদ্যোক্তারা এসব সুবিধা গ্রহণ করে বাংলাদেশের এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে সরাসরি কিংবা যৌথ বিনিয়োগ করতে পারেন।
দ্যা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টির (বিএনসিসিআই) প্রেসিডেন্ট বাণী রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ভারতের জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প কর্পোরেশনের (এনএসআইসি) আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সুরেশ কারমালিসহ বিএনসিসিআই’র নেতারা বক্তব্য রাখেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক কাঁচামাল রয়েছে। এসব কাঁচামাল এনে বাংলাদেশে শিল্পপণ্য উৎপাদন এবং এসব পণ্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসহ ভারতের মূল ভূ-খন্ডে পুনঃরপ্তানির সুযোগ রয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে উভয় দেশের উদ্যোক্তারা ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।
ভারতের ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশিদের জন্য বিদেশে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা তুলে নেয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা দেশের গন্ডি পেরিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোসহ পুরো ভারতবর্ষ এবং বিশ্বের অন্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারবেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের খ্যাতনামা উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান প্রাণ আরএফএল ত্রিপুরাতে বিনিয়োগ করেছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ার ভারতের পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক আয়োজন। দশ দিনব্যাপী আয়োজিত এ মেলা ২০১৮ সালের পহেলা জানুয়ারি শেষ হবে। এতে ভারত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মিশর, তুরস্ক, ভুটান, চীন, মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের ৪ শতাধিক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলায় স্থাপিত বিভিন্ন স্টলে হস্ত, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পপণ্য, স্টিল, কয়লা, পেট্রোলিয়াম, টেলিকমিউনিকেশন, গ্রীণ এনার্জিসহ বিভিন্নখাতে উৎপাদিত পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশসহ অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সাথে ভারতের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।