নিউজ ডেস্ক:
নেশাগ্রস্ত দুর্বৃত্তদের মারামারি থামাতে গিয়ে দুই দুর্বৃত্তের বেধড়ক পিটুনিতে নিহত বাংলাদেশী ইশতিয়াক কাদির ওরফে রবিকে (৫১) হত্যার মামলায় এক আমেরিকানের ২৩ বছর থেকে আজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্কে ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড না থাকায় ৩২ বছর বয়েসী এই দুর্বৃত্ত ডেভিড লুইমকে হয়তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাগারেই কাটাতে হবে।
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি গ্রেগরী এল ল্যাসাক এ রায় প্রদান করেন। কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্ণী রিচার্ড এ ব্রাউন এনআরবি নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী জানান, ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ৪০ মিনিটে নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউতে বাংলাদেশী মালিকানাধীন একটি বারে নেশাগ্রস্তরা মারপিটে লিপ্ত হয়। সে সময় সেখানে ছিলেন রবি। তিনি মারপিট থামাতে গিয়ে উল্টো আক্রমণের শিকার হন।
রবি মেঝেতে পড়ে গেলে ডেভিড লুইমি তাকে বেধড়ক লাথি, ঘুষি এবং মাথায় আঘাত করতে থাকেন। এ অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন রবি। দীর্ঘ প্রায় দু’বছর কোমায় থেকে ২০১৪ সালের ১৪ মে ফ্লাশিংয়ে অবস্থিত লং আইল্যান্ড কেয়ার সেন্টারে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগের আগ পর্যন্ত রবির জ্ঞান ফিরলেও কোন কথা বলতে পারেননি। তাকে খাদ্য দেয়া হয় টিউব এবং ভ্যান্টিলেটারে।
রবির চাচা ইলিয়াস কবির জানান, ১৬৮-০২ হিলসাইড এভিনিউতে অবস্থিত ‘হিলসাইড ইন’ নামক বারে বন্ধুদের সাথে সাক্ষাতের জন্য রবি গিয়েছিলেন। সে সময় মদ্যপ অবস্থায় ভিনদেশীরা হাঙ্গামার চেষ্টা করে। তা থামাতে গিয়েই আক্রান্ত হন রবি। দুই যুবক তার ওপর চড়াও হয়। রবি কাজ করতেন ম্যানহাটানে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে।
ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে আরো জানান, ঘাতকেরা গা ঢাকা দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের মার্চে রেড লাইট অতিক্রমের জন্য টহল পুলিশ কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের সময়েই লুইমাকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়।
জানা গেছে, রবির স্ত্রী দেশে থাকেন। রবির সিটিজেনশিপের ইন্টারভিউর তারিখ সম্পর্কিত চিঠি বাসায় এসেছিল এমন পরিস্থিতির কয়েকদিন পর। সিটিজেন হয়েই স্ত্রীর জন্য স্পন্সর করতে চেয়েছিলেন। ইন্টারভিউয়ের কয়েকদিন আগেই এমন নিষ্ঠুরতার শিকার হওয়ায় স্ত্রী আর আসতে পারেননি। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আগত রবির বোনসহ আত্মীয়-স্বজনেরা নিউইয়র্কে বসবাস করছেন।