নাটোর জেলা সংবাদদাতাঃ নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে চলছে নির্বাচনের জমজমাট হাওয়া। আওয়ামীলীগ ও বিএনপির বাইরে পাল্লা ভারী করতে পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টিও। লাঙ্গলের প্রচারণায় পিছিয়ে থাকতে নারাজ তারা। দুই উপজেলার কোন জায়গাতেই বাদ পড়েনি তাদের পোষ্টার ও বিলবোর্ড চলছে শুধুই প্রচারণা। নাটোর-১ আসনে জাপার প্রার্থী হিসেবে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আবু তালহা ও জেলা জাপার যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক এবং বিভিন্ন সময়ে জেলা জাপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা নাটোর জজ কোর্টের ক্ষ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবি এ্যাডভোকেট সোহেল রানা। এই নির্বাচনী প্রচারণার মাঝে ঘটে গেছে এক চমকপ্রদ ঘটনা।
এই আসনের দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় জাপার প্রচারণায় থাকা দুই প্রার্থীর একই ধরনের বিলবোর্ড ও ব্যানার। দলীয় প্রতীক লাল সবুজেই চলছে প্রচারণা। তবে এ বিষয়ে হতাসাগ্রস্থ হয়ে গেছে দলের নেতা কর্মীরা। একেক জনের মনে রয়েছে যেন একেক ধরনের ভাবনা।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা জাপার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিগত নির্বাচনে আবু তালহার মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পরে তিনি আর কখনো এলাকাতেই আসেননি এবং নেতা কর্মীদের সাথে তার কোন যোগাযোগও নেই। সুখে দুখে পাশে ছিলেন এ্যাডভোকেট সোহেল রানা। আবু তালহা শুধু ব্যাক্তিগত লোক দিয়ে পোষ্টার বিলবোর্ড লাগিয়ে বেড়াচ্ছেন।
একই ধরনের বিলবোর্ড হওয়ার কারন জানতে চাইলে তারা বলেন, বর্তমানে এ আসনে প্রচারণায় সব থেকে এগিয়ে আছেন সোহেল রানা, এলাকার জনগন তাকেই এমপি হিসেবে দেখতে চায়। যে কারনেই হয়তো জাপার আরেক প্রার্থী তাকে অনুকরন (নকল) করে রাজনীতিতে ফ্যাক্টর হতে চাইছেন। তবে দলের অধিকাংশ নেতা কর্মীরা মনে করেন তারা দুজন দুজনার প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও হয়তো সমঝোতা করে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাই একই ধরনের বিলবোর্ড।
তবে এ বিষয়টিও মানতে নারাজ দুই উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের জাপা নেতারা, তারা বলেন, এ্যাডভোকেট সোহেল রানা জাতীয় পার্টির রাজনীতির শুরু থেকে একই ধরনের (লাল সবুজ) বিলবোর্ড তৈরী করেন যাতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শুভেচ্ছা বাণী দেওয়া হয়। বর্তমানে সোহেল রানার জনপ্রিয়তা বেশি হওয়ায় তার প্রচারণাকেই নকল করে মাঠে নামতে চাইছেন সাবেক এমপি আবু তালহা।
জাপার দুই প্রার্থী আবু তালহা ও এ্যাডভোকেট সোহেল রানার মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা হতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লালপুর উপজেলা জাপার শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, আমরা যতদুর জানি ও দেখেছি এ্যাডভোকেট সোহেল রানা একজন পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতা, ও তরুন যুবসমাজের অহংকার। তার মত নেতা একজন মদ ব্যাবসায়ী দুর্নীতিবাজ কালোবাজারী সাবেক এমপি আবু তালহার মত লোকের সাথে সমঝোতা করতে পারেনা। তিনি সর্বদা পরিস্কার রাজনীতিই পছন্দ করেন।
এ ব্যাপারে নাটোর জেলা জাপার যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সোহেল রানা বলেন, আমি দলের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছি। মানুষের কাছে গিয়ে লাঙ্গলের জন্য ভোট প্রার্থনা করছি। এখন কেও যদি আমার প্রচারণাকে অনুকরন করে তবে আমার কি বলার থাকতে পারে। আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো দল যদি আমাকে লাঙ্গল প্রতীক দেন তবে আমি নির্বাচনে আসবো এবং আমি আশাবাদী জনগন আমাকে নির্বাচিত করবে। কোন দুর্নীতিবাজ মদ ব্যাবসায়ীকে জনগন দেখতে চাইনা। আর কাউকে নকল করা বা অনুকরন করা এক ধরনের অপরাধ যার শাস্তি জনগন তাকে (আবু তালহা) দেবেন।
এ ব্যাপারে ফোনে কেন্দ্রীয় জাপার ভাইস-চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আবু তালহার সাথে কথা বললে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।