পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, এমন শিশু অপহরণের ঘটনা দেশে প্রতিদিন হয় গড়ে অন্তত তিনটি। অপহৃত ২৯ ভাগ শিশুকে উদ্ধার করা যায়নি। অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ ১০ মাসে মারা গেছে ৪৮২ জন শিশু। শিশু অপহরণের পেছনে পারিবারিক শত্রুতা, জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, পাচার ও বিক্রি করা প্রধান উদ্দেশ্য বলে পরিসংখ্যানে জানা গেছে।
পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, ৯ মাসে সারা দেশে অপহরণের মামলা হয়েছে ৬৯৫টি। উদ্ধার হয়েছে ৪৯১ শিশু। উদ্ধার না হওয়া বাকিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা অজানা।
আইন ও সালিস কেন্দ্র জানিয়েছে, ১০ মাসে নির্যাতন, সহিংসতা, ধর্ষণ, অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪৮২ শিশুর। গত বছর একই সময়ে মারা যায় ৪২১ শিশু।
শিশুদের প্রতি অপরাধ বন্ধ করতে সচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ অপরাধ বিশ্লেষকদের।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে সামগ্রিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে পরিস্থিতিকে অনুকূলে রাখার, মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরি করার যে পরিস্থিতি তাও করতে পারছে না। একটা ঘাটতি বা শূন্যতা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।’
শিশুরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না বলে তারা অপরাধীদের সহজ টার্গেট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারেও বাড়ছে শিশু নির্যাতন।
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মেখলা সরকার বলেন, দিন দিন আমরা আরও প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে যাচ্ছি। আমরা আইসোলেশন হয়ে যাচ্ছি। মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। এবং যখনই আমরা বিচ্ছিন্ন হব, যার ফলে অন্যের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা কমে যাচ্ছে। আমাদের সম্পর্কগুলোর মধ্যে একটা নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। কাছের মানুষের সঙ্গে নানা পরিবর্তন দেখা যায়।
অংশীজনদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে শিশু অধিকার বিষয়ক ব্যবস্থা আরও কার্যকর করা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার তাগিদ বিশ্লেষকদের।