নিউজ ডেস্ক:
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের দেশের জনগণকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবলে রূপান্তরিত করতে পারলে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করা সম্ভব হবে।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই ভবনে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে দেশীয় ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে কাজ করছে, যারা প্রতিবছর প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে বিদেশে পাঠানো সম্ভব হলে বর্তমানের প্রায় ১০ গুণ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ বছর ৭ লাখ ৮৯ হাজার লোককে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১০ লাখ লোক পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ সময় তিনি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
নুরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি দেশ থেকে টাকা পাচারের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা দেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। ঋণখেলাপির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেশের শিল্পায়নের ধারা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে।
দক্ষ শক্তির অভাবে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বৈদেশিক আয় অর্জনে ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে সেমিনারে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে আমাদের শিক্ষা ও পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্যসূচি সংশোধন করা একান্ত আবশ্যক। যার মাধ্যমে আমরা শিল্প ও সেবা খাতের জন্য উপযোগী দক্ষ জনবল তৈরি করতে পারি।
দক্ষ জনবল তৈরিতে দেশের বেসরকারি খাত কর্তৃক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগকে করমুক্ত সুবিধা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আবুল কাসেম খান আরো বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশের প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন, ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি সর্বপোরি আর্থিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে পেশাগত, ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১৫-১৬ এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্যে ১ দশমিক ৮ শতাংশ ম্যানেজার, ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রফেশনালস এবং ১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রযুক্তিবিদ আছেন।
সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, আমাদের শিল্প খাতে দক্ষ জনবলের অভাব আছে এবং শিল্প খাতসমূহে ব্যবসায়িক যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি এবং দরকাষাকষিতে দক্ষ ব্যবস্থাপকের প্রয়োজনীয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে আরো নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
সেনিমারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের (এনএসডিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম খোরশেদ আলম। আরো বক্তব্য রাখেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (টেকনিক্যাল অ্যান্ড মাদরাসা ডিভিশন) অশোক কুমার বিশ্বাস।