শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জের তাড়াশমুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বরের এই দিনে তাড়াশ ও তার আশেপাশের এলাকা পাকিস্তানি শত্রুমুক্ত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় যুদ্ধকালীন সংগঠন পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধে পাক বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় ঘটে তাড়াশের নওগাঁয় ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বরের যুদ্ধে। পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের সর্বাধিনায়ক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা ও সহ-সর্বাধিনায়ক প্রয়াত গাজী ম, ম আমজাদ হোসেন মিলনের নেতৃত্বে চলনবিল এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সে সময় চরম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। নওগাঁর সেই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা অভিযানে ১৩০ জন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্য মারা যায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে এসেছিল।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে ১১ নভেম্বর চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র ওলিয়ে কামেল হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী (রঃ) মাজার এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়াবহ যুদ্ধ সংগঠিত হয়, যা উত্তরবঙ্গের মধ্যে বৃহৎ যুদ্ধ।
এদিকে ১১ নভেম্বর যুদ্ধে পাক বাহিনী পরাজিত হয়ে প্রতিশোধ নিতে ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর তাড়াশের আমবাড়িয়া গ্রামে অগ্নি সংযোগ ও নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে ১৩ জন শহীদ হয়েছেন, তারা হলেন- আমবাড়িয়া গ্রামের শহীদ ইয়ার মোহাম্মাদ, শহীদ মেহের মন্ডল, শহীদ কিয়ামত আলী, শহীদ জুব্বার ফকির, শহীদ সুলতান সেখ, শহীদ সফিজ উদ্দিন সেখ, শহীদ দেছের আলী, শহীদ ফয়েজ উদ্দিন, শহীদ মোক্তার হোসেন, শহীদ ওসমান আলী, শহীদ মজিবর রহমান, শহীদ আমিন উদ্দিন, শহীদ আব্দুর রহমান।
এছাড়াও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন- মাওলানা তাজ উদ্দিন ও দেছের আলী প্রাং। অবশেষে যুদ্ধকালীন সংগঠন পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসীকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা জনতা তাড়াশ এলাকা শত্রুমুক্ত ঘোষণা করে উৎসবে মেতে উঠেন।