কথাগুলো বলছিলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার আম বাগান মালিক রফিকুল ইসলাম। আরেক বাগান মালিক একরাম আলী বলেন, আম রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পেরে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে।
দ্বিতীয়বারের মতো ঠাকুরগাঁওয়ের আম ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে। এতে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। পাশাপাশি সমৃদ্ধ হবে জেলার ও দেশের অর্থনীতি। আর এ রপ্তানির মাধ্যমে ভবিষ্যতে মানসম্মত আম বিদেশে রপ্তানির পথ সুগম হবে বলে আশা চাষিদের। তারা লাভের আশায় আরো বেশি বেশি আম-বাগান করতে আগ্রহী হবেন।
দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। জেলায় ধান, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম সবজি ও ফল উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত পণ্য জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দ্বিতীয়বারের মতো এ জেলার আম্রপালি, বানানা ম্যাংগো ও বারি আম-৪ জাতের আমসহ বিভিন্ন জাতের আম ইউরোপে রপ্তানি হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা।
মানসম্মত আম উৎপাদন, ন্যায্যমূল্য ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলা থেকে এ বছর বিপুলপরিমাণ আম রপ্তানি হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। নিজের বাগানের উৎপাদিত আম ইউরোপে রপ্তানি করতে পেরে খুশি বাগান মালিকরাও। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার আম বাগান পরিদর্শন করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
এ ব্যাপারে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড লিংকের সিইও কাওসার আহমেদ রুবেল বলেন, ঠাকুরগাঁয়ের আম রপ্তানি উপযোগী বলে আমরা মনে করি। তাই দ্বিতীয়বারের মতো এ জেলা থেকে আম রপ্তানি করা হচ্ছে। আশা করছি, চাষিরা আমাদের গুণগত মানসম্পন্ন আম সরবরাহ করবে। তাহলে বিদেশে আমাদের আমের চাহিদা বাড়বে, সে সঙ্গে আমের বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণ আম রপ্তানি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বছর প্রকল্প শুরু হয়েছে, এর আওতায় ঠাকুরগাঁওয়ের আম যাবে ইউরোপের বাজারে। এর মাধ্যমে বাগান মালিকদের পাশাপাশি এ শিল্পে যারা আছেন তারা সবাই লাভবান হবেন বলে আশা করছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপে আম পাঠানো হবে। বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে মানসম্মত আম সংগ্রহ করা হবে। তারপর তা প্রক্রিয়াজাত করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হবে। রপ্তানির মাধ্যমে চাষিরা অধিক মূল্য পাওয়ার পাশাপাশি আরো বেশি পরিমাণে স্থানীয় শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। আম চাষের সঙ্গে জড়িত লোকজনের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। একই সঙ্গে জেলা ও দেশের অর্থনীতিতে সুদিন আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।