জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষিপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ছেলে সাবু’র (২৮) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর মুখে হারপিক ঢেলে দেওয়া হয়েছে বলে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছে। গ্রামবাসি সুত্রে জানা গেছে, সাবু একই গ্রামের আলমের স্ত্রী তাছলিমার সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সেই সুবাদে সে প্রায় ওই বাড়িতে যেত। বুধবার মধ্যরাতে সাবু ওই বাড়িতে যায় বলে গ্রামে প্রচার হয়েছে।
বিষয়টি জানতে পেরে তাছলিমার বড় ছেলে নজরুল, মহসিনের ছেলে নুর ইসলাম ও মিজানুর সাবুকে মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এরপর তাকে লক্ষিপুর ফুটবল মাঠে ফেলে রাখে। রাত ১২.৫০ টার সময় কে বা কারা সাবুকে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাবার নাম ভুল করে ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার সকালে তার মৃত্যু ঘটে। এরপর তার লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই সন্ধ্যায় লক্ষিপুর গ্রামে দাফন করা হয়। সাবুর মৃত্যু রহস্য নিয়ে লক্ষিপুর গ্রামে নানা কথা প্রচার হচ্ছে।
লক্ষিপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান জানান, গ্রামের সব শ্রেনীর মানুষ বলাবলি করছে সাবুকে মেরে ফেলা হয়েছে। কারণ সে কারো সামনে মুখ উচু করে কথা বরেনি। ময়না তদন্ত করলে হয়তো বিষয়টি পরিস্কার হতো। কিন্তু গ্রামের কিছু মানুষ ময়না তদন্ত করতে দেয়নি। এ সব নিয়ে গ্রামে প্রশ্ন উঠেছে সাবু নিজে আত্মহত্যা করলে কেন নিজ বাড়ি থেকে হাফ কিলোমিটার দুরত্বে ফুটবল মাঠে বিষপান করবে ? আর যারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল তারা কেন বাবার নাম ভুল করলো ? কেন পুলিশকে না জানিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হলো ?
তবে গ্রামের একটি সুত্র জানাচ্ছে, সাবুকে জোর করে মুখে বিষ দিয়ে তাকে সেবন করতে বাধ্য করা হয়েছে। সুত্রটি জানায়, সাবুর বাবা খলিলুর রহমান ছিলেন দোড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। তার বাবার মৃত্যুর পর মা পারভিনা খাতুনকে অন্যত্র বিয়ে হয়। এ কারণে এই রহস্যজনক মৃত্যুর ব্যাপারে প্রতিবাদ করার মতো তার কেও নেই।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাঃ সাবিক জানান, বৃহস্পতিবার সাবু নামে একটি ছেলে ভর্তি করা হয়। সে বিষ পান করেছিলো বলে রেজিষ্টারে উল্লেখ আছে। এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন পুলিশকে জানালে হয়তো সুরোতহাল রিপোর্টের সময় মৃত্যুর প্রাথমিক আলামত জানা সম্ভব হতো।