স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহে ঈদের কেনাবেঁচায় দোকানীদের ও বিপনি-বিতানে নেই তেমন ব্যস্ততা। দীর্ঘ একটি বছর পেরিয়ে আবার সামনে আসছে ঈদুল আযহা। আগামী ১০ জুলাই সারাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কোরবানি ঈদ, অর্থাৎ ঈদুল আযহা। অথচ ঝিনাইদহ জেলা শহর সহ ৬ উপজেলা শহর ও বাজারগুলোতে এবারের ঈদে কেনাকাটার কোনো আগ্রহ মানুষের মধ্যে উপলব্ধি করা যাচ্ছে না। ঈদের কেনাকাটার কোনো ছোঁয়া লাগেনি গার্মেন্টস, কসমেটিক্স, শাড়ী কাপর, জুতার দোকানে। জেলা শহরের বিপনি-বিতানে ঘুরে বোঝার উপায় নেই আর চার দিন পর ঈদুল আযহা। যেখানে কেনাবেচায় মুখরিত থাকার কথা সেখানে খরিদ্দারের অভাবে অলস সময় পাড় করছেন দোকানীরা।
বুধবার ঝিনাইদহ শহরের ড্রেস ম্যান, ব্লু ড্রিম, টার্গেট, বন্ড সহ নামি-দামি বিপনি-বিতানে শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবীসহ হরেক রকমের পোশাক। শহরের মুজিব চত্বর এলাকা, মেটানির সামনে, পায়রা চত্বর এলাকা, পোস্ট অফিস মোড় এলাকা ও পৌরসভার সমনের বিভিন্ন পোশাকে সেজেছে গার্মেন্টস কাপড়ের দোকানগুলো। এনেছেন নতুন নতুন কালেকশনও। তবে এবারে বাজারে বেশিরভাগই রাখা হয়েছে সুতির কাপড়। ছেলে, মেয়ে, শিশুসহ সকলের জন্যই সব ধরনের পোশাক ও তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
এবারের কালেকশনগুলোর মধ্যে রয়েছে, ছেলে শিশুদের জন্য শার্ট, ফতুয়া, শর্ট স্লিভ, ফুল স্লিভ, লং প্যান্ট, কোয়ার্টার প্যান্ট ও বিভিন্ন রংঙের পাঞ্জাবী। এছাড়া মেয়ে শিশুদের জন্য রয়েছে, ফ্রক, পার্টি ফ্রক, ফ্যাশান টপস্, থ্রী পিচ, জ্যাম্প সূট, নীমা সেট, টপ বটম সেট, লং ও শর্ট স্লিভ শার্ট। পুরুষদের জন্য রয়েছে, হালকা ও টেকসই ফেব্রিকের তৈরী বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জামী কালেকশন, শার্ট, টি-শার্ট, ইজি কেয়ার শার্ট, পাজামা, ডেনিম প্যান্টস, জিন্স ও গ্যাবাডিং। মেয়েদের জন্য রয়েছে, থ্রী-পিচ, টু-পিচ, কাজ করা জর্জেট কামিজ, ডিসকস কামিজ, বিভিন্ন রংয়ের প্রিন্ট লং শার্ট, টপস, টিউনিকস, কামিজের জন্য রয়েছে এ্যামব্রোডারী স্ক্যান্টস পালাজ্জো, লেগিংস।
এছাড়াও মেয়েদের জন্য রয়েছে নানা কালেকশনের বোরকা। মুহাইমিনুল,আজিজুল, আলাউদ্দিন নামের কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা হলে তারা বলেন, বাজারে এসেছিলাম ঘুরতে।ঈদের বেচাকেনা কেমন হচ্ছে সেটা দেখবার জন্যে এবং কিছু জিনিস কিনতে।অলস সময় কাটাতে শহরের সমবায় মার্কেটে দেখা গেছে এবারে দোকানীরা অনেক ভালো ভালো কালেকশন ম্যানেজ করেছেন। অথচ কেনাবেচা নেই তেমন একটা।
ড্রেস ম্যানের ম্যানেজার তৌহিদ ও ব্লু ড্রিম এর ম্যানেজার মাহফুজ এর সাথে কথা বললে তারা জানান, এবার ঈদুল আজহায় তাদের দোকানে বেচাকেনা তেমন একটা নেই বললেই চলে। তাই তো অলস সময় পার করতে হচ্ছে। ড্রেস ম্যানের মালিক তরিকুল ইসলাম তারেক জানান, ঈদুল আজহায় মুলত মানুষ গরু, ছাগল কেনা কাঁটায় ব্যাস্ত থাকে তাই তেমন একটা বেঁচা বিক্রি হয়না।তারপরও কিছুকিছু বিপনি-বিতানে ঈদকে সামনে রেখে বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কেনাকাটা করতে এসে স্ত্রীর জন্য থ্রী-পিচ ও ছেলের জন্য থ্রী কোয়াটার প্যান্ট এবং নিজের জন্য একটি পাঞ্জাবী কিনেছেন।
তিনি বলেন, একটু ঘুরতে এসে কাপড় পছন্দ হওয়ায় কিছু কেনাকানা করলাম। ঈদ উপলক্ষ্যে দাম একটু বেশি হলেও পণ্যরে মান অনেক ভালো। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরের কালেকশনগুলো একটু বৈচিত্রময়। এর আগে মহিলা ক্রেতাদের পদচারনায় মুখরিত থাকতো জেলা শহরের বিভিন্নল কাপড়, কসমেটিক্স ও জুতার দোকানগুলো। ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করার পাশাপাশি হাসি খুশি থাকতেন। এবারে কেনাবেঁচায় মন্দা ভাব থাকায় হাসি নেই দোকানীদের মুখে।
বিক্রয়কারীরা বলেন, প্রতি বছর সকাল থেকে রাত অর্ধেক পর্যন্ত কেনাবেঁচায় ব্যস্ত সময় পার করতে হতো। এবছর ক্রেতার অভাবে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। পোশাকের পাশাপাশি মন্দা ভাব পড়েছে জুতা ও প্রসাধনীর দোকানেও। কারন প্রতি বছর শাড়ী কাপড়ের সাথে ম্যাচিং করে কেনাবেচা হতো চুড়ি, নেইল পলিশ, ফিতা,ক্লিপ। জুতা, স্যান্ডেলও কিনতেন মেচিং করেই।