স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমপুর এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের আম চাষিদের প্রায় ২৫-২৬ লাখ টাকা বাগান মালিকদের পরিশোধ না করে ৪ জন আম ব্যাপারী পালিয়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের দেয়া নাম ঠিকানায় যোগাযোগ করেও এই নামের কোনো ব্যবসায়ী পাওয়া যায়নি। আবার স্থানীয় মধ্যস্থকারীরাও এ নিয়ে কোনো কর্ণপাত করছে না। ফলে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ভুক্তভোগী কয়েকজন বাগান মালিক জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ও মধুহাটি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কাশিমপুর, ল²ীপুর, কামতা, হাজিডাঙ্গা, শঙ্করপুরসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক চাষি বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ করে আসছে। আম চাষ অত্র গ্রামগুলোতে এক প্রকার প্রধান অর্থকারী ফসল হিসেবে পরিণত হয়েছে। এবছর আগে ভাগেই যশোরের বসুনদিয়া গ্রামের আম ব্যবসায়ী জুলফাস হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, শ্রী রবেন ও শ্রী উজ্জ্বল কুমার নামে পরিচয় দানকারী আম ব্যবসায়ীরা আম কেনেন। প্রথমে কিছু টাকা দিয়ে তারা বাগান থেকে আম ভাঙতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে বাগান মালিকদের টাকা পরিশোধ না করে পালিয়ে গেছে। তাদের দেয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করে না পেয়ে আম বাগান মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কাশিমপুরের আম চাষি সিরাজুল ও আসলাম জানান, আম বিক্রি শুরুর আগেই দূরদূরান্ত থেকে আম ব্যবসায়ীরা অত্র এলাকায় অবস্থান নেয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে তারা আম কেনেন। এ বছরও তার কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। এবছর ৪ ব্যাপারী আম কেনার সময় চাষিদের কিছু পরিমাণ টাকা দেন, বাকি টাকা আম অর্ধেক বিক্রি করার পর পরিশোধ করবেন বলে চাষিদের সাথে চুক্তি করেন। কিন্তু এবছর আম ব্যবসায়ীরা টাকা দেয়ার কথা বলে গাছ থেকে আম পেড়ে ট্রাকে সাজান। রাতের কোনো এক সময় টাকা না দিয়ে পালিয়ে যান তারা। তাদের দেয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করেও এই নামের কোনো আম ব্যবসায়ীদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আবার তাদের দেয়া মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। আম চাষি সোরাফ হোসেন ও জাফু জদ্দার জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে রবিন এবং উজ্জ্বল দীর্ঘ ১২-১৩ বছর এই এলাকার চাষিদের সাথে পরিচিত। তারা টাকার ব্যাপারে কোনো ঝামেলা করেন না। তাদের কথা এবং লেনদেনে এলাকার আম চাষিদের নিকট একটা বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এজন্য বেশি পরিমাণ আম কিনতে পারেন। তাদের সাথেই আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী গ্রামের চাষিদের নিকট থেকে আম কেনেন। তারা এ ধরনের কান্ড ঘটিয়ে বসবে তা কেউ বিশ্বাসই করতে পারেনি। চন্পিুর গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, কাশিমপুর একটি ফার্মের জায়গা মাসিক চুক্তিতে কয়েকজন ব্যবসায়ী ভাড়া নেয়। সেখানে আম জড়ো করে প্রতিদিন ট্রাকযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেন। এবছর কয়েকটি গ্রামের ৬০-৬১জন আম চাষিদের প্রায় ২৫-২৬ লাখ টাকা পরিশোধ না করে চলে গেছে। কাশিমপুর গ্রামের মেম্বার রিপন হোসেন জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবছরও বাগান মালিকরা ব্যবসায়ীদের নিকট আম বিক্রি করেছিলো। কিন্তু অনেকেরই চুক্তি পরিমাণ টাকা না দিয়ে পালিয়ে চলে গেছে। তাদের দেয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করেও এই নামের কোনো ব্যবসায়ী পাইনি বাগান মালিকেরা।