ইমাম বিমান, ঝালকাঠি থেকে :
ঝালকাঠিতে জেএমবি সংগঠন কতৃক দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় দুই জেএমবির সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ঝালকাঠির আদালত। ১৯ ফেব্রুয়ারী বুধবার দুপরে ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক এসকে.এম. তোফায়েল হাসান আসামি জিয়াউর রহমান (জিয়া ) এবং ফরিদ হাওলাদারের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
এ বিষয় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোস্তাফিজুর রহমান মনু জানান, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গী সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩টি জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। ৬৩টি জেলার মধ্যে ঝালকাঠিতে বোমা বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে যা সিরিজ বোমা হামলায় অন্তরভুক্ত। পরিকল্পিত এ হামলায় ঝালকাঠি শহরেরহ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বোমা বিস্ফোরণ করা হয় । বোমা হামলা ঘটনায় ঝালকাঠি সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আহত অবস্থায় আটক ফরিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং বরিশাল কোতয়ালী থানার বোমা বিস্ফোরণের একটি মামলার আসামি আবু সোলায়মান সুজনের জবানবন্দিতে ঝালকাঠির জিয়াউর রহমান জিয়ার নাম প্রকাশ পায়। উক্ত মামলা বিচার কার্য শেষে ঝালকাঠি আদালতে ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইবুনাল-২ এর বিজ্ঞ বিচারক এসকে.এম. তোফায়েল হাসান মামলার রায় দেন।
উল্লেখ্য ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গী সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলায় একই সময়ে বোমা হামলা চালায়। সেই বোমা হামলায় সারাদেশে দু’জন নিহত ও ১০৪ জন আহত হন। ঘটনার পরপরই সারা দেশে ১৫৯টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে ডিএমপিতে ১৮টি, সিএমপিতে ৮টি, আরএমপিতে ৪টি, কেএমপিতে ৩টি, বিএমপিতে ১২টি, এসএমপিতে ১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৭টি, খুলনা রেঞ্জে ২৩টি, বরিশাল রেঞ্জে ৭টি, সিলেট রেঞ্জে ১৬টি, রংপুর রেঞ্জে ৮টি, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৬টি ও রেলওয়ে রেঞ্জে ৩টি। এর মধ্যে ১৪২টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। বাকি ১৭টি মামলায় ঘটনার সত্যতা থাকলেও আসামি শনাক্ত করতে না পারায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। এসকল মামলায় ১৩০ জন এজাহারনামীয় আসামি ছিল। গ্রেপ্তার করা হয় মোট ৯৬১ জনকে। অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭২ জনের বিরুদ্ধে। এসব মামলায় ৩২২ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। এর মধ্যে ফাঁসির দণ্ড হয়েছে ১৫ জনের। খালাস পেয়েছে ৩৫৮ জন আর জামিনে রয়েছে ১৩৩ জন আসামি।