নিউজ ডেস্ক:
সারা গায়ে কালো কালো দাগ। শুকনো চামড়ায় ভর্তি। যেন সাপের খোলসের মতো বেরিয়ে আসছে। প্রথম দর্শনে ১৬ বছরের মেয়েটিকে দেখে ভয় পেয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।
কিন্তু ভয় কিংবা অযাচিত কৌতহল নয় যথাযথ চিকিৎসার প্রয়োজন শালিনী যাদবের। ভারতের মধ্যপ্রদেশের এই বাসিন্দা আসলে এরিথ্রোডার্মা নামে বিরল রোগে আক্রান্ত। বিরল এই চর্ম রোগ রেড ম্যান সিনড্রোম নামেও পরিচিত। যাতে প্রাণহানি খুব একটা হয় না। কিন্তু জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। যেমনটা জন্ম থেকে ভুগতে হয়েছে শালিনীকে। প্রতি ৪৫ দিন অন্তর শালিনীর শরীরের চামড়া সম্পূর্ণ খসে যায়। আর নতুন চামড়ার উদয় হয়।
কিছুদিনের মধ্যে এই নতুন চামড়ারও একইরকম হাল হয়। আর প্রতিদিন এই জ্বালা সহ্য করতে হয় শালিনীকে। প্রতি ঘণ্টা অন্তর চামড়া নরম ও পরিষ্কার রাখতে সাবান দিয়ে গোসল করতে হয়। প্রচুর পরিমাণে ক্রিম মেখে থাকতে হয়।
মেয়ের এই ব্যথা চোখে দেখতে পারতেন না রাজ বাহাদুর ও দেবকনওয়ার। স্থানীয় ডাক্তারের কাছে জানতে পারেন এর চিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু তা যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ। দিনমজুর হিসেবে খাটা রাজ বাহাদুরের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তাদের মাধ্যমেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বিনা চিকিৎসার আবেদন জানানো হয়। শেষে স্পেনের এক বেসরকারি হাসপাতাল শালিনীর চিকিৎসার দ্বায়িত্ব নেয়। বিনামূল্যেই শালিনীকে সুস্থ করে তোলার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বিদেশি হাসাপাতালের পক্ষ থেকে। এর জন্য খুব শিগগিরিই স্পেনে উড়ে যাবে মধ্যপ্রদেশের ‘সর্পকন্যা’।
টিভি দেখতে ভালবাসে শালিনী। সেখানেই স্পেন দেখেছে ১৬ বছরের কিশোরী। মাদ্রিদের রাস্তাঘাট, ডাক্তারের চেম্বার, অপারেশন টেবিল এখন থেকেই হয়তো সে মনে মনে এঁকে ফেলেছে। যে কল্পনাশক্তিতে সে নতুন করে বাঁচার ইচ্ছে তৈরি করেছে।