নিউজ ডেস্ক:
আশুলিয়ায় গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ৪ ব্যক্তিকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের সময় শিল্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে জিম্মি অবস্থায় চার অপহৃতকে উদ্ধারসহ ২০ হাজার টাকা ও একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে চাঁদা আদায়ের সময় তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আব্দুল আউয়াল।
আটককৃতরা হলো শিল্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মকবুল হোসেন (৩০), তার সহযোগী ভুয়া ডিবি পুলিশের সদস্য বিপ্লব হোসেন(২৬), স্বপন হোসেন (২৬) ও হাসমত আলী শেখ। এছাড়া তাদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া চার ব্যক্তি হলেন শামীম, রায়হান, আতিয়ার, মেহেদী হাসান।
আটক শিল্প পুলিশ সদস্য মকবুল হোসেনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানা এলাকায়। এছাড়া চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটির (ঢাকা মেট্রো চ-৫৬-১৫৯৬) মালিক ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি লতিফ মণ্ডলের বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগী শামীম জানান, প্রতিদিনের মতো সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় বাইপাইল স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন। এসময় একটি মাইক্রোবাস তার সামনে দাঁড়ায়। এরপর গাড়ি থেকে কয়েকজন ব্যক্তি নেমে মাদক রয়েছে বলে দেহ তল্লাশী শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা শামীমকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে উঠিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
এছাড়া টাকা না দিলে মাদক মামলায় আসামি করে আদালতে চালান করে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয়।
পরে বাধ্য হয়ে তার মা চম্পা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে তারা। পরে তার মা বিষয়টি থানা পুলিশে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অপহরণকারীদের আটক করে তাকে উদ্ধার করে।
ঢাকা শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক শামিনুর রহমান শামীম বলেন, চাঁদা আদায়ের ঘটনায় জড়িত এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, সকালে ডিবি পুলিশের এক দল চাঁদা আদায়ের চেষ্টার খবর পেয়ে সাদা পোশাকে ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয় থানা পুলিশ। পরে একটি প্রাইভেটকার থেকে কয়েকজন লোক এক নারীর কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সময় চাঁদাবাজদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে দুই চাঁদাবাজ পালিয়ে যায়।
এঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরেই সাভার-আশুলিয়ায় গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে তুলে নিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনা ঘটছে। এরা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় শেষে ভুক্তভোগীদেরকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
বিডি-প্রতিদিন