নগদ টাকাসহ ইজিবাইক ও মোবাইল ফোন খোয়া!
জনসম্মুখে বৃদ্ধার দেহ তল্লাশির ঘটনায় সমালোচনা : সিসিটিভি’র ফুটেজে চোর সনাক্ত
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরসহ অত্র এলাকায় চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংঘবদ্ধ চোরের দল সুযোগ বুঝে প্রকাশ্যে একেরপর এক চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে রোগীর স্বজনসহ স্থানীয়রা আছেন চোর আতঙ্কে। গতকাল একইদিনে হাসপাতাল এলাকায় ৫টি চুরির ঘটনায় হতবাক সবাই। এরআগে একইদিনে ৫টি চুরির ঘটনা ঘটেনি। সংঘবদ্ধ চোরচক্র অবাধে চুরির ঘটনা ঘটালেও চোর সনাক্তে ও ধরতে এখনো ব্যর্থ চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। তবে পুলিশ চোর সনাক্তে ও ধরতে তাদের নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গতকাল বিভিন্ন হাসপাতাল চত্বর ও অত্র এলাকা থেকে ব্যটারি চালিত ইজিবাইক, রোগীর মোবাইলসহ নগদ টাকা কৌশলে চুরি করে নিয়ে গেলে হাসপাতাল এলাকায় সবার মাঝে চোর আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। গতকাল সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একজন চোর সনাক্ত করে পুলিশকে জানিয়েছে। তবে চুরির পরবর্তী সময়ে জনসম্মুখে এক বৃদ্ধা নারীর দেহ তল্লাশির ঘটনা ঘটে। পরে উপযুক্ত প্রমান না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একজন বৃদ্ধা মহিলার দেহ তল্লাশির বিষয়টি স্থানীয়রা ভালো চোখে দেখছেন না? এহেন কর্মকান্ডের জন্য সমালোচনা চলে হাসপাতাল এলাকাজুড়ে।
জানা গেছে, গতকাল সকাল ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের ইটিপাড়ার আজগার আলীর ছেলে মিনার তার নিজের অটোবাইক নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এক রোগীর খাবার দিতে আসে। পরে ব্যাটারি চালিত অটোবাইকটি সদর হাসপাতাল চত্বরে রেখে খাবার দিতে রোগীর ওয়ার্ডে যায় মিনার। খাবার দিয়ে ১০ মিনিট পরে ফিরে এসে দেখে তার অটোটি যেখানে রেখে গছেন সেখানে নেই। মিনার অনেক খোজাখুজি করে না পেয়ে অবশেষে সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শামীম কবিরকে জানান। আরএমও ডা. শামীম কবির অটোচুরির অভিযোগ পেয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করতে থাকেন। এসময় সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরে পড়ে চারজনের একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র ৫ মিনিটের মধ্যে অভিনব কায়দায় অটোটি নিয়ে পালাচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোর সনাক্ত করা হয়। পরে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের চালক ও মালিক মিনার সদর থানায় অভিযোগ করেন। এরআগে আরএমও ডা. শামীম কবির পুলিশকে ফোন দিয়ে চোর ধরতে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছে। চোর ধরতে আরএমও ডা. শামীম কবির পুলিশকে সহযোগিতা করায় সবাই তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
এঘটনার কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে হাসনুন নেছা নামের এক রোগীর মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়।
এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ২১৮নং রুমের সামনে থেকে ডাক্তার দেখাতে আসা আলমডাঙ্গা উপজেলার বড়-গাংনীর স্কুলপাড়ার মফিজুলের স্ত্রী ডলি খাতুনের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে তিন হাজাত সাতশত টাকা, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের গাঙপাড়ার সাইফুলের স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে তিনশত টাকা ও দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছী ইউনিয়নের সদাবড়ি গ্রামের নতুনপাড়ার হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুনের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নয়শত বিশ টাকা চুরি হয়ে গেলে সবার মধ্যে চোর আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে।
এসময় ডাক্তার দেখাতে আসা দামুড়হুদা মুক্তারপুর মাঝেরপাড়ার মৃত মতলের শেখের স্ত্রী আশরা খাতুনকে (৫৫) চোর সন্দেহ করেন সদাবড়ি গ্রামের রোজিনা খাতুন। পরে জনসম্মুখে ওই বৃদ্ধা নারীর দেহ তল্লাশির করা হয়৷ এনিয়ে সদর হাসপাতাল এলাকায় চাপা উত্তেজনা দেখা যায়। জনসম্মুখে বৃদ্ধা নারীর দেহ তল্লাশি করা নিয়ে অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করতে থাকে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অভিযুক্ত বৃদ্ধা ও অভিযোগকারি রোজিনাকে সদর হাসপাতালের আরএমও শামীম কবিরের অফিসে রুমে নিয়ে তদন্ত চালায়। ঘটনার সাথে বৃদ্ধ আশরা খাতুনের কোন প্রশাণ না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে ব্যাটারি চালিত অটো চুরির বিষয়ে সদর থানায় উপ-পরিদর্শক মিঠুন খান বলেন, আমি হাসপাতালে থেকে সিসিটভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। চোর ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।