নিউজ ডেস্ক:
অস্বাভাবিক’ মৃত্যুবরণকারী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর বাসা পরিদর্শন করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক দল। একই সঙ্গে লাশের সুরতহাল তৈরিকারী ম্যাজিস্ট্রেট, লাশ নামানোর সময় প্রত্যক্ষদর্শী, দিয়াজের পরিবারের সদস্য এবং পুলিশের সাথে কথা বলেন তারা। রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় দিয়াজের বাসা পরিদর্শন করেন তারা। পরে বিকেলে চিকিৎসক দল চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের সাথে কথা বলতে আসলে তাদের সামনেই দিয়াজ অনুসারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের একটি অংশ।
পরিদর্শন শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ বলেন, দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের পর আমাদের আরো কিছু তথ্য প্রয়োজন ছিল। সে তথ্যগুলো সংগ্রহ করতে এসেছি। পরিদর্শনকালে যে রুম থেকে দিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তার পারিপার্শ্বিক তথ্যগুলো নিয়েছি। পাশাপাশি আমরা কিছু ছবি কালেকশন করেছি। মরদেহ প্রত্যক্ষকারীদের সাক্ষ্য নিয়েছি। উপজেলা নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট যিনি প্রথম সুরতহাল তৈরি করেছেন তার সাক্ষ্য নিয়েছি। ’
এক প্রশ্নের জবাবে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আত্মহত্যা না হত্যা সেটি এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। তথ্য ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা বসে পর্যালোচনা করব। তারপর হত্যা না আত্মহত্যা সে বিষয়ে বলা যাবে। ’
জানা যায়, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দিয়াজের বাসায় যায় ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা। পরে দিয়াজের বাসার খাট ও ফ্যানের দূরত্ব নির্ণয় করেন। আশেপাশের ভাঙা গ্লাস ও ব্যালকনির দরজাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্রাইম সিনের ছবি তুলে নমুনা সংগ্রহ করেন মেডিকেল টিম। পরে দিয়াজের মরদেহ নামানোর সময় উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেন। এছাড়া দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী, বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা ও দিয়াজের ভগ্নিপতি সরওয়ার আলমের সাথে এই্ বিষয়ে কথা বলেন।
দিয়াজের বাসা পরিদর্শন শেষে বিকেলে প্রথম ময়নাতদন্ত করা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে আসেন। এ সময় দিয়াজের অনুসারীদের উপর হামলা করা হয়। এতে কামরুল ও রিয়াদ নামে দিয়াজের দুই অনুসারী আহত হন।
দিয়াজের বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার নিপা বলেন, ‘ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক টিমের সঙ্গে আমরাও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরাও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এ খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আরেকটি অংশের নেতা ও চমেক হাসপাতাল ছাত্রলীগের একটি পক্ষের নেতারা জড়ো হয়ে পুলিশ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে আমাদের সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেন। একই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুর রব হলে দিয়াজের অনুসারীদের বেশ কিছু কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর চবি থেকে দিয়াজের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর থেকে দিয়াজকে হত্যার অভিযোগ করে আসছে তার পরিবার ও অনুসারীরা। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিয়াজ আত্মহত্যা করেছে বলে প্রতিবেদন আসলেও পরে তা প্রত্যাখান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে তার পরিবার।