চুয়াডাঙ্গায় আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতালের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি
ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগীদের অন্য ক্লিনিক বা হাসপাতালে স্থানান্তর
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসপাতাল সড়কের আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতাল নামক ক্লিনিকে ডাক্তার নেই, নার্স নেই, পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেই, ড্রাগ লাইসেন্স নেই, ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই, ক্লিনিক বন্ধের কোনো নোটিশ নেই, পরিচালনার দায়িত্বে কেউ নেই, চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল্যতালিকা নেই, রোগীদের জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে ও রোগীদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের রশিদ দেখাতে ব্যর্থ মোট ১০টি ত্রুটি খুঁজে পেয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এসব ত্রুটির ভিত্তিতেই ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতালটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের নেতৃত্বে এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি ডা. আওলিয়ার রহমানের উপস্থিতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় আঁখি তারা ক্লিনিকটির চিকিৎসা প্রদানের বৈধতা না থাকা ও ক্লিনিকে ১০টি ত্রুটি পাওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯-এর ৫৩ ধারায় ওই ক্লিনিকের মালিক ডা. তরিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং একই সঙ্গে ক্লিনিকটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেন মোবাইল কোর্ট। এ ছাড়া ক্লিনিকটি সিলগালা করে বন্ধ করায় ওই ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগীদের অন্য ক্লিনিক বা হাসপাতালে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই চিকিৎসাসেবা প্রদান ও সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় গত শনিবার বিকেলে ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সে সময় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেননি তিনি। বিভিন্ন মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় গত রোববারও তিনি ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন। তবে গতকাল মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় আঁখি তারা জেনারেল হাসপাতালটির সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য সিভিল সার্জন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছায় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আঁখি তারা ক্লিনিকে আমেনা খাতুন নামের এক প্রসূতির সিজারের পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্লিনিকের চিকিৎকদের বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ তোলেন ওই প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্র, শনি, রোব ও সোমবার ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকায়।