নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত এক রোগীকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করার অভিযোগ উঠেছে। পরে রোগীর স্বজনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে স্যালাইন পুশ করেন কর্তব্যরত নার্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতা আর অবহেলার কারণে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করতে দেখা যায়। গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার সকালে বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবীর মেয়াদোত্তীর্ণ ওই স্যালাইনটি হেফাজতে দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দিবাগত রাত পার করে রোববার ভোর পৌনে চারটার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়ার ফয়জুলের স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন (৫৫) গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এ সময় মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের একজন নার্স একটি স্যালাইন পুশ করেন মনোয়ারার শরীরে। কিন্তু রোগীর শরীরে পুশ করা ওই স্যালাইনটি ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ, যার মেয়াদ ২০১৮ সালের মে মাসে শেষ হয়েছে। যেটা ওই রোগীর এক স্বজনের চোখে পড়ে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে দ্রুত মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পরিবর্তন করে নতুন স্যালাইন পুশ করেন কর্তব্যরত নার্স।
মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন রোগীর শরীরে পুশ করার বিষয়ে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ইনচার্জ রোজিনা খাতুন বলেন, অনেকগুলো স্যালাইনের সঙ্গে হয়তো মেয়াদোত্তীর্ণ ওই স্যালাইনটিও এসে থাকতে পারে। রোগীর শরীরে প্রায় এক শ গ্রামের মতো স্যালাইন সরবরাহ হলেও রোগীর কোনো সমস্যা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি
রোজিনা খাতুন আরও বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার অফিস ছুটির সময় তাড়াতাড়ি করে স্যালাইনগুলি নেওয়া হয়েছে। এ সময় ভুলক্রমে একটি মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন চলে আসে। তবে পরবর্তীতে আমরা দ্রুত মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনটি পরিবর্তন করে রোগীর শরীরে নতুন একটি স্যালাইন পুশ করা হয়। তাই রোগীর অবস্থা বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার সিরাজুল হক মনি বলেন, ‘ঘটনার সময় সকালে আমি হাসপাতালে ছিলাম। ওই রোগীকে হাসপাতালের সরকারি মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করা হয়েছিল। বিষয়টি নজরে এলে আসলে নতুন স্যালাইন পুশ করেন নার্সরা।’
সিভিল সার্জন ডা. এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের নিকট থেকে বিষয়টি শোনার পর ওয়ার্ডে গিয়ে প্রতিটি স্যালাইনের মেয়াদ যাচাই-বাছাই করেছি, প্রতি স্যালাইনের মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত আছে। আর ওই মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনটি কীভাবে এল, তা আমরা তদন্ত করে দেখব।’