মো: মাসুদ রানা,কচুয়া
জীবন সংগ্রামে জীবিকা নির্বাহের যুদ্ধে মানুষকে কত কিনা করতে হয়। ক্ষুধা নামক শব্দের সাথে যুদ্ধ করে করে কত পথ অতিক্রম করতে হয় দরিদ্র মানুষকে। আধুনিক জীবন ব্যবস্থার সবকিছুর পরিবর্তন হলেও প্রত্যান্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোতে আজও ফেরিওয়ালাদের দেখা যায়।
এভাবে কাধেঁ করে বিভিন্ন গ্রামে প্রতিদিন এভাবেই তাকে ছুটে চলতে হয় অনেকের। জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেকে নানান পেশায় যুক্ত থাকেন। কেউ বা চাকরি,আবার কেউ বা অন্য পেশা। তবে অনেকের ভাগ্যে চাকরি না ছুটলেও জীবিকার তাগিতে বেচেঁ নেন বিভিন্ন কর্ম। যার কারনে অনেকেই ফেরী কিংবা নানা পেশায় যুক্ত হোন।
তেমনি একজন ফেরিওয়ালা যুবক শাহ আলম। ৫ বছর ধরে চাঁদপুরের কচুয়ার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় কিংবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হরেক রকমের মাল বিক্রি করে থাকেন সে। তার বাশিঁর আওয়াজে গ্রামের নারী,শিশু ছুটে আসেন তার সামনে। এতে করে তাদের আকর্ষন করে নানা বাহারি রকমের মাল বিক্রি করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর রনমন্ডল গ্রামে।
অকালে বাবা মঞ্জিল মিয়া ও মায়ের মৃত্যুতে জীবন সংগ্রামে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন সে। বর্তমানে সে দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে থাকেন। প্রতিদিন ভোর থেকে বের হয়ে কচুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাশির সুরে মনোমগ্ধকর আকর্ষন করে মালামাল বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। এদিকে ফেরিওয়ালা শাহআলম পুরাতন প্লাষ্টিকের ফেলে দেয়া সামগ্রী,চামড়ার জুতা, পঞ্চ জুতার বেইল,কাঁচের বোতল, পুরাতন টিন, লোহা,পুরাতন মোবাইলসহ অন্যান্য পরিত্যক্ত মালামাল নিয়ে নতুন জিনিসপত্র দেন।
গ্রামের শিশু থেকে শুরু করে বয়বৃদ্ধরাও ফেরি ওয়ালাদের হাক ডাক শোনার সাথে সাথে পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক এবং লৌহজাত পন্য নিয়ে ছুটে যায় তার কাছে । ফেরিওয়ালা শাহ আলম জানান, প্রতিদিন কাধেঁ করে বিভিন্ন এলাকায় তিনি এভাবে হেটেই ফেরি করে বেড়ান। শিশুদের খেলনা,পাতিল ও জিনিসপত্র বিক্রি করেন। প্রতিদিন ৮-৯ শ টাকা বিক্রি করলে তার ৩শ টাকা আয় হয়।
তিনি আরো জানান, অভাবের কারনে একমাত্র ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি এখন এই ফেরি করে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। প্রতিদিন সকালে কাঁধে ভার নিয়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে নানা রকমের জিনিসপত্র বিক্রি করে কোন রকম ভাবে সংসারের ব্যয়ভার চালিয়ে যাচ্ছি।
তবে তার একটি ছোট্ট গাড়ি হলে ফেরী করে বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে সুবিধা হতো বলে জানান তিনি। তাই সরকারি-বেসরকারি ভাবে একটি গাড়ি উপহার পেলে সীমাহীন কষ্ট দূর হবে বলে জানান সে।