মো: মাসুদ রানা,কচুয়া
চাঁদপুরের কচুয়ায় তীব্র শৈত্য প্রবাহে স্থবির হয়ে আছে জনজীবন। এতে করে শিশু ও বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন রোগে। টানা কয়েক দিনের শীত ও ঘন কুয়াশায় যানবাহন চলাচলে হিমসিম হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে এ উপজেলায় শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের। তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তুষারাচ্ছন্ন বাতাস আর ঘন কুয়াশায়সহ হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ উপজেলার মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। অনেক মধ্য বয়সী ও বৃদ্ধরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
কচুয়া উপজেলা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পালাখাল, সাচার, দোয়াটি, রহিমানগর,পনশাহী,বায়েক ও বারৈয়ারা এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে কনকনে শৈত্যপ্রবাহ। প্রচণ্ড তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে যাবাহনগুলোকে সকাল বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
দোয়াটি গ্রামের বজলুর রহমান নামের একজন দিনমজুর বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ । প্রতিদিন কাজ না করলে আমাদের সংসার চলে না। কয়েকদিন যাবত অতিরিক্ত কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাসের কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না।
পালাখাল গ্রামের কৃষক আবুল বাসার বলেন, আমরা প্রতিদিন বদলা দিয়ে সংসার চালাই। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে হাত পা অবশ হয়ে আসছে। কোনো কাজকর্ম করতে পারছি না।
অটো চালক মবিন,আলমগীর ও সফিকসহ একাধিক লোকজন জানান, তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে আমরা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছি না। কিভাবে যে সংসার চালাবো জানি না।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সোহেল রানা জানান, প্রতিনিয়ত এ হাসপাতালে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু ও বৃদ্ধরা ভর্তি হচ্ছেন। তবে তাদের নিয়মিত চিকিৎসা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে আক্রান্তদের বেশি করে গরম পানি পান ও ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী রেজিস্টার ডা. এমএ তাহের নয়ন বলেন, তীব্র শীতের কারণে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগের রোগী বেশি দেখছি। আগের তুলনায় হাসপাতালে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। আমরা সঠিকভাবে চেষ্টা করছি তাদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দেয়ার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, দিনদিন তীব্র শীত বাড়ছে। কোনো অসহায় মানুষ কিংবা ছিন্নমূল মানুষ যাতে শীতে কষ্ট না পায়, তাই আমরা শীতার্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছি। শীত থাকা পর্যন্ত শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলবে।