কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ফলে সৃষ্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্থগিত রয়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এ অবস্থায় অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো পূর্ণ নম্বরে হবে নাকি অটো পাস দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ভুয়া বিজ্ঞপ্তিও। তবে, এই বিজ্ঞপ্তিগুলোর কোনটিই সঠিক নয় বলে জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
কমিটি জানিয়েছে, স্থগিত পরীক্ষাগুলো পূর্ণ নম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া শিগগিরই এসব পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি প্রকাশ করা হবে।
সোমবার (১২ আগস্ট) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে এ তথ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কম নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হয়েছে, যা বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি কর্তৃক ইস্যুকৃত নয়।
এতে বলা হয়, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪-এর স্থগিত পরীক্ষাগুলো গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রকাশিত ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সিলেবাস ও মানবণ্টন অনুযায়ী এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। স্থগিত পরীক্ষাগুলোর সময়সূচি শিগগির স্ব স্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ও গণমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন সিলেট বোর্ড বাদে সব শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আরও তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
সূচি অনুযায়ী, এখনো ১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া বাকি। বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)।
সর্বশেষ সব পরীক্ষা স্থগিত করে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। সে অনুযায়ী আগামী ৮ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়।
বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ায় এবং দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষাগুলো নেওয়ার ব্যাপারে কাজ করছে বোর্ডগুলো।