আন্দোলন আর দ্রোহকাব্যের রচিয়তা একজন আবু সাঈদ

0
6

আমিন বাবু:

যে মাটি থেকে এককালে নুরুলদীন জেগে ওঠার ডাক দিয়েছিলেন; সেখান থেকেই নতুন বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটিয়েছেন আবু সাঈদ। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে প্রথম শহীদ তিনি। তাকে বলা হচ্ছে আন্দোলন আর দ্রোহকাব্যের রচয়িতা। এমন পরিস্থিতিতে একটি লাইনই শুধু মনে আসে, নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই, তার ক্ষয় নাই।

বিক্ষোভে যখন গুলির মুখে সবাই যখন পিছু হটেছিল নির্ভিক আবু সাঈদ বুলেটের মুখে বুক পেতে দিয়ে যেন বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন কবির অমর বাণী। দেহ ঝাঝরা হলেও প্রাণের বিচ্ছুরণ ঘটালেন দেশজুড়ে। গণমাধ্যমের কল্যাণে এই ছবি ছড়িয়ে পড়লে জেগে ওঠে বিশ্ববিবেক। বিপ্লবের প্রতীক হয়ে ওঠেন একজন আবু সাঈদ।

মৃত্যুর এই ঘটনায় কোটা বিক্ষোভ রূপ নেয় বৈষম্যবিরোধী ও এক দফার আন্দোলনে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে করা হয় বিতর্কিত এফআইআর এবং নাবালক আসামি। রক্তাক্ত জুলাই জন্ম দেয় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় সরকার। জন্ম হয় আরেক বাংলাদেশের।

সাঈদ তার সহযোদ্ধা-সহপাঠি আর সমন্বয়কদের মাঝে নতুন স্পৃহা জাগিয়েছেন। কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে নয়, সোচ্চার হতে হবে রাষ্ট্র সংস্কারে। তার প্রাণ উৎসর্গের দিনটিকে শহীদ দিবস এবং সাঈদকে মেধা যোদ্ধার বীর খেতাবে ভূষিত করতে চান তারা।

পরিবারও চান সাঈদের আত্মত্যাগের মর্যাদা রক্ষা করুক রাষ্ট্র। একই দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার ফলের অপেক্ষায় ছিলেন সাঈদ। যা প্রকাশের আগে, মিলে গেছে অমরত্বের সনদ।

সাঈদের শিক্ষকদের মন্তব্য সাঈদ শুধু একজন সময়ের অংশ হয়ে থাকবে না সে ইতিহাসের একটি প্রতিবাদী চরিত্র হয়ে আজীবন থাকবে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আবু সাঈদ সমগ্র বাংলাদেশকে জাগ্রত করেছেন বলেও জানান তারা।