নিউজ ডেস্ক:
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে সোমবার আলোচনায় বসতে চায় সরকার।
রবিবার দিবাগত রাতে শাহবাগে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক সরকারের পক্ষ থেকে এ বৈঠকের আহ্বান জানান।
এসময় নানক বলেন, আমি সরকারের পক্ষ থেকে এসেছি। কোটা পদ্ধতি দীর্ঘসময় ধরে চলে আসছে। এটি সংস্কার নিয়ে সাধারণ ছাত্ররা যে আন্দোলন করছে, যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদের কখনো কাম্য নয়।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য। সোমবার সকাল ১১টায় সাধারণ সম্পাদক আলোচনায় বসবেন। কখন-কিভাবে, কতজন আলোচনায় বসবে সেটা তাদের সঙ্গে আলাপ করে নির্ধারণ করা হবে।
নানক আরো বলেন, এ আন্দোলন নিয়ে কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছে, আবু বকর নামে এক ছাত্র নাকি মারা গেছেন। আবু বকর নামে কোনো ছাত্র মারা যান নি। এসময় সেখানে উপস্থিত আবু বকর সাংবাদিকদের বলেন, আমি কপালে এবং বুকে সামান্য আঘাত পেয়ে আহত হয়েছি।
শাহবাগ থানায় আটক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে এক প্রশ্নে জবাবে নানক বলেন, এ ঘটনায় আটক সব শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এদিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাত দেড়টা পর্যন্ত থেমে থেমে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঢামেকে ভর্তি হওয়া আহতরা হলেন, আওলাদ হোসেন (৫০), ঢাবির ছাত্র আকরাম হোসেন (২৬), আবুবকর সিদ্দিক (২২), রফিকুল ইসলাম (২৪), মাহফুজুর রহমান (২৭), রাফি আলামিন (২৬), রাজু (২৩), সোহেল (২২) ও ওমর ফারুকসহ প্রায় অর্ধশত।
ঢামেক পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (এসআই)বাচ্চু মিয়া জানান, শাহবাগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছে। আহতরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে রবিবার বিকেল সোয়া ৩টা থেকে পাঁচ দফা দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে শাহবাগ মোড়ে অবরোধ শুরু করেন তারা। এ সময় তাদের মুখে স্লোগান ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও, ‘১০% এর বেশি কোটা নয়।’
পরে বিকালে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চাই সংসদের অধিবেশনে সরকার বিষয়টি সমাধানের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দেবে। নতুবা আমরা অবরোধ তুলবো না।’
আন্দোলনকারীদের ৫ দফা দাবির মধ্যে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ, বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, অভিন্ন বয়সসীমা, একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।
বিডিপ্রতিদিন