নিউজ ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিন এশিয়ার প্রথম মন্টব্লাঙ্ক দ্য লা কালচার আর্টস প্যাট্রনেজ এ্যাওয়ার্ড গ্রহন করলেন রাজীব ও নাদিয়া সামদানি। ব্যক্তিগতভাবে শিল্পকলার অনন্য পৃষ্টপোষকতার জন্য আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সম্মাননা পেলেন তারা।
মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে এই প্রথম কেউ এই সম্মান অর্জন করলেন।
মন্টব্লাঙ্ক দ্য লা কালচার আর্টস প্যাট্রনেজ এ্যাওয়ার্ড একটি বাৎসরকি সম্মাননা পুরস্কার যা ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করে। সমকালীন সময়ের শিল্প পৃষ্টপোষকদের উৎসাহ ও স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এই এ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিন এশিয়ায় ২০১৭ সালে এই প্রথমবারের মত এটি আয়োজিত হচ্ছে।
ঢাকা আর্ট সামিট ও সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিল্পের পৃষ্টপোষকতার জন্য রাজীব ও নাদিয়া সামদানিকে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের মাধ্যমে সম্মাননা হস্তান্তর করা হয়। সামদানি আর্ট এ্যাওয়ার্ড এর পাশাপাশি সামদানি আর্ট ফাউন্ডশেন বাংলাদেশ এবং আর্ন্তজাতিক প্রাঙ্গনে সমকালীন শিল্প ও শিল্পীর প্রচার নিয়ে কাজ করে।
এই এ্যাওয়ার্ডের সুদীর্ঘ তালিকায় রাজীব ও নাদিয়া সামদানি যোগ হয়েছে সেই তালিকায় নাম রয়েছে ইংল্যান্ডরে প্রিন্স চার্লস্, জাপানিজ শিল্পী ইয়োকো ওনো, নাট্যলেখক রবার্ট উইলসন, এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত মিউজিশিয়ান কুইনজি জোনস্, ফিল্ম প্রডিউসার মায়া হফ্ম্যান এবং ইটালিয়ান আর্কিটেক্ট রেনজো পিয়ানো।
মন্টব্লাঙ্ক একটি জার্মান কোম্পানী যারা কি না সৌখিন লেখার সামগ্রী, ঘড়ি, গয়না এবং চামড়ার সামগ্রী তৈরী করে। আর্ন্তজাতিক ব্র্যান্ড কার্টিয়ার, ভ্যান ক্লিফ এবং আর্পেলস্রে মত কোম্পানীর সাথে তারা সম্পৃক্ত। মন্টব্লাঙ্ক কালচারাল ফাউন্ডেশন ১৯৯২ সাল থেকে ২৫ বছর ধরে শিল্প ও শিল্পীদের পৃষ্টপোষকদের স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। মন্টব্লাঙ্ক দ্য লা কালচার প্যাট্রনেজ এ্যাওয়ার্ড কে পৃষ্টপোষকদের জন্য পৃথিবীর শীর্ষ পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এই অনুষ্ঠানটি ১৩ই সেপ্টেম্বর দুবাইয়ের আলসার্কাল এভিনিউ এ অবস্থিত কঙ্কক্রিটে অনুষ্ঠিত হয় এবং তা পরিচালনা করেন মন্টব্লাঙ্ক কালচারাল ফাউন্ডেশনের চেয়্যারম্যান স্যাম বারডাউইল এবং টিল ফেলরাথ। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই রাজীব এবং নাদিয়া সামদানিকে পুরস্কিত করা হয়। এই পুরস্কারের সাথে ১৫,০০০ ইউরো প্রদান করা হয়েছে যা সামদানি দম্পতি বাংলাদেশী শিল্পীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা এ্যাকাডেমীকে দান করবেন।
সামদানি দম্পতি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে একমাত্র এবং ১ম বারের মত এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এই বছর পৃথিবীর মধ্যে ১৭ জনকে এই এ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়, যারা কি না আর্ন্তজাতিক বিচারক দ্বারা নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজীব এবং নাদিয়া সামদানি বাংলাদেশী সমকালীন শিল্প ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং শিল্পী ও স্থপতিদের আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ২০১১ সালে সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের সূচনা করেন। সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশী এবং দক্ষিন এশীয় নবীন শিল্পীদের আর্ন্তজাতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহন করতে সহায়তা করে এবং বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, রেসিডেন্সি এবং শিক্ষাকার্যক্রম আয়োজন করে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হল ঢাকা আর্ট সামিট যা একটি অবানিজ্যিক গবেষনা ও প্রদর্শনীর মঞ্চ।
সামদানি দম্পতি বাংলাদেশের প্রথম ভাস্কর্য পার্ক ‘শ্রী হট্ট-সামদানি আর্ট সেন্টার ও স্কাল্পচার পার্ক’ সিলেটে উদ্বোধন করতে যাচ্ছে ২০১৮ সালে। তারা দক্ষিন এশীয় এবং আর্ন্তজাতিক শিল্প সংগ্রহের জন্য পরিচিত এবং এই স্বীকৃতি হিসেবে ‘আর্ট নিউজ’ পত্রিকায় ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে ২০০ শীর্ষ সংগ্রাহক, আর্ট রিভিউ পত্রিকায় ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে পাওয়ার ১০০ এবং আর্টনেট নিউজ পত্রিকায় ২০০০ সালে পৃথিবীর শীর্ষ ১০০ শিল্প সংগ্রাহক তালিকায় তাদের নাম রয়েছে।
রাজীব সামদানি যুক্তরাজ্যে বিখ্যাত টেট মিউজিয়ামের দক্ষিন এশীয় অধিগ্রহন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কো-চেয়্যারম্যান এবং তারা দুজনেই এই মিউজিয়ামের আর্ন্তজাতিক কাউন্সিলের সদস্য। রাজীব ও নাদিয়া সামদানি যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিন এশীয় আর্টস্ কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দুবাইয়ের আলসার্কাল এভিনিউ প্রোগ্রামিং কমিটির সদস্য, আর্ট দুবাই এবং শ্রীলংকার কলোম্বো দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীর উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য।