নিউজ ডেস্ক:
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা মুফুতি আব্দুল হান্নান এবং তার দুই সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি আজ বুধবার রাতে কার্যকর হতে পারে।
কারা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্র জানায়, আজ রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে দুই কারাগারে তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে। মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল রয়েছেন কাশিমপুর হাউসিকিরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে। দেলোয়ার হোসেন রিপন রয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে।
এ দিকে মঙ্গলবার কারা কর্তৃপক্ষ তাদের স্বজনদের ডেকে পাঠায়। রাতেই স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খবর পেয়ে মুফতি হান্নানের বড় ভাই স্ত্রী ও দুই মেয়ে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে কোটালিপাড়া থেকে রওনা দেন। ভোরে তারা গাজীপুরে পৌঁছে কারাগারের আশপাশে এলাকায় অবস্থান নেন। পরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তারা কারাগারে প্রবেশ করেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর মঙ্গলবার দুই জঙ্গির সঙ্গে শেষ দেখা করার জন্য তাদের স্বজনদের কাছে মঙ্গলবার বার্তা পাঠানো হয়। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুলের পরিবারের কোনো সদস্য কারাগারে আসেননি।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, তাদের ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। কারাবিধি মোতাবেক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারাগারে জল্লাদ ও ফাঁসির মঞ্চ সবকিছুই প্রস্তুত আছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী ও জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
২০০৮ সালে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ মামলার ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ২০০৯ সালে আসামিরা আপিল করেন। বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দুই আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুল। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ করে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে আপিল বিভাগ। আসামিরা এ রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন জানালে গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ২১ মার্চ প্রকাশিত হয়। পরের দিন তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে কারাগারে পাঠায় বিচারিক আদালত। মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানান। গত ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর নির্বাহী আদেশ ও জেলকোড অনুসারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।