নিউজ ডেস্ক:
সারা মুখে ফুসকুড়ির দাগ, হাত পায়ে শিকল বাঁধার চিহ্ন, অসংখ্য ক্ষত নিয়েও বার বার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা তারপর আবার আইএসের হাতে ধরা পড়া, আবার নির্যাতন। তারপরও থেমে না থেকে আবার নতুন আশা নিয়ে পালানোর চেষ্টা কিন্তু এবারও ব্যর্থ। এবং শাস্তিস্বরুপ আবারও ধর্ষণ, নির্যাতন। এভাবে অসংখ্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন লামিয়া হাজি বাশার নামের এ ইয়াজিদি তরুণী। এখন তিনি মুক্ত, পাখির মত। আর কোনো ভয় নেই তার। তবুও ফেলে আসা দিনগুলোর ভয়াবহ নির্যাতন আজও তেড়ে বেড়ায় তাকে।
লামিয়ার নির্যাতনের গল্প শুনলে গা শিহরে উঠে। প্রতিনিয়ত তাকে শিকার হতে হয়েছে ধর্ষণসহ শারীরিক নির্যাতনের। তিনি এক সঙ্গে ১০, ২০ এমনকি ৪০ পুরুষের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন। কিন্তু সাহস হারাননি। জীবনের আশায় আবার পালানোর চেষ্টা করেছেন। ধরা পড়ে আবার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তারপরও ভেঙে পড়েননি। আশার আলো জ্বালিয়ে এখনও বেঁচে আছেন। এখন তার মত আইএসের নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার নারীকে বাঁচার প্রেরণা যোগাচ্ছেন।
সম্প্রতি লামিয়া হাজি বাশার গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছেন তার হৃদয়বিদারক গল্প যা শুনলেই গা শিহরে উঠে। চোখে ভেসে উঠে আইএসের নির্যাতনের শিকার তার মত আরও হাজার হাজার নারীর মলিন মুখ।
ডেইলি মেইলের রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলছেন লামিয়া
ইরাকের মসুলে প্রায় ৪ লাখ ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর বাস। এখনও এ শহরের জনগোষ্ঠী আইএসের নিয়ন্ত্রণে। তাদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। লামিয়া হাজি বাশার এমনই একজন ইয়াজিদি তরুণী যিনি চোখের সামনে বাবা, মা, ভাই, বোনকে মরতে দেখেছেন। নিজে বার বার পালানোর চেষ্টা করে কোনোভাবে বেঁচে গেছেন। তাই হয়তো আজ কোনো লামিয়ার গল্প শুনতে পাচ্ছি আমরা।
লামিয়া হাজি বাশার বলেন, ‘আমি যখন পালানোর চেষ্টা করি তখন আমাকে বার বার ধরে বন্দি করা হয়েছে। আমাকে বলেছিল, যদি পালানোর চেষ্টা করি, তাহলে এক পা কেটে ফেলবে। আমি বলেছিলাম, যদি আমার এক পা কেটে ফেলা হয়, তাহলে অন্য পা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করবো। দুই পা কেটে ফেলা হলেও পালানোর চেষ্টা করবো।’ অর্থাৎ বার বার আইএসের হাতে ধরা পড়েছেন কিন্তু কখনো মুক্তির আশা ছেড়ে দেননি। মুক্তির আশা নিয়ে বার বার পালানোর চেষ্টা করেছেন।
লামিয়া জন্মেছিলেন উত্তর ইরাকের কোচো নামের ইয়াজিদি গ্রামে। সে গ্রামে বসবাস করে প্রায় ১৮০০ ইয়াজিদি। তারা সবাই আইএসের নিয়ন্ত্রণে। লামিয়া ওই এলাকার সবচেয়ে ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সুখি জীবনযাপন করছিলেন। আর আজ এমন ভয়ংকর নির্যাতনের শিকার যা কল্পনাও করা যায় না।
আইএসের হাতে আটক হওয়ার স্মৃতিচারণ করে লামিয়া বলেন, ‘প্রথম যখন আমি আইএসের নাম শুনি, তখন আমার মনে হয়েছিল হয়তো আমাদের এলাকায় নতুন কোনো প্রাণির আবির্ভাব হয়েছে। অর্থাৎ তারা যে আইএস তা জানতাম না। তারা যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাও জানতাম না।’
এর কিছুদিন পরই আইএস ইরাকের মুসল দখল করে কোচো নামের ইয়াজিদি গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। গ্রামের মানুষ তখনও ধারণা করতে পারেনি, তাদের মত একটি শান্তিপ্রিয় গ্রাম আইএসের লক্ষবস্তুতে পরিনত হবে।
এর কিছুদিন পরে লামিয়াদের গ্রামে দুই গাড়ি কালো পোশাকধারী জঙ্গি আগমন করে নিরীহ মানুষদের বন্দি করে। অবস্থা খারাপ দেখে কয়েকটি পরিবার পালাতে সক্ষম হলেও বেশিরভাগ মানুষই তাদের হাতে বন্দি হয়। তাদের বলা হয়, যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে না; তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিয়ে হত্যা করা হবে।
পরের দিনই গ্রামের সব পুরুষকে একটি বড় ভবনের নিচতলায় দাঁড় করানো হয় এবং নারীদের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। কমবয়সী তরুণী ও শিশুদের একটি গ্রুপ আর বয়স্ক ও বিবাহিত নারীদের একটি গ্রুপ।
লামিয়া বলেন, ‘আমার বাবা, ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যদের কথা ভেবে করে খুব চিন্তা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, আইএস তাদেরকে মেরে ফেলবে।’
পরদিন সব বন্দি পুরুষদের অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আলাদা করে। তাদের সঙ্গে বয়স্ক নারীদেরও নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর একের পর এক গুলির শব্দ ভেসে আসে লামিয়ার কানে। বুঝতে বাকি থাকে না, যে তার বাবা ও দুই ভাই এতক্ষণে মারা গেল।
আইএসের নির্যাতনের শিকার আরেক নারী। এমন হাজার হাজার নারী আইএসের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন
লামিয়াসহ অনেক তরুণী ও শিশুকে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করার জন্য ইরাকের মুসল শহরে নিয়ে আসা হয়। লামিয়ার সঙ্গে তার তিন বোনও ছিল। মুসলে এনে শুরু করেন অমানবিক নির্যাতন। সেখানকার আইএস নেতারা তাদেরকে একটি ঘরে বন্দি করে আঘাত করে এবং গায়েও হাত দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুমু খাওয়া শুরু করে।
নেতাদের ভোগ করা শেষ হলে মুসলের একটি বড় ভবনে নিয়ে আসা হয় তাদের। সে ভবনে রীতিমত যৌনদাসী কেনাবেচা চলে। লামিয়ার মত শত শত ইয়াজিদি নারীকে বিক্রি করার জন্য পশুপাখির মত সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
লামিয়া বলেন, ‘সে ভবনে সব সময় যৌনদাসী কেনাবেচা চলে। অন্য এলাকার আইএস বা আইএস সমর্থনকারীরা এখান থেকে যৌনদাসী কিনে নিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে যেতে না চাইলে শুরু হয় নির্যাতন। উলঙ্গ করে কেবল (তার) দিয়ে আঘাত করতো। এটা দেখতে খুবই যন্ত্রণাদায়ক যে, একটি বয়স্ক মানুষ যখন মাত্র ৯-১০ বছর বয়সের কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করছে। যন্ত্রণায় তারা ছটফট করছে কিন্তু তারা তা শুনছে না। এটা এতই হৃদয় বিদারক ঘটনা যে বলে বোঝানো সম্ভব না।’
সে ভবন থেকে লামিয়া ও তার এক বোনকে কিনে নেয় এক সৌদি যুবক। তারপর তাদেরকে আইএস নিয়ন্ত্রিত শহর রাক্কাতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চলে তাদের উপর অমানসিক নির্যাতন। বেশির ভাগ সময় তাদের হাতে হ্যান্ডকাপ রাখা হয় যেন পালিয়ে যেতে না পারে।
লামিয়া বলেন, ‘সে খুবই জঘণ্য মানুষ। আমরা তিন দিন তার সঙ্গে ছিলাম, তিনদিনই তারা আমাদের প্রহার করেছে। ধর্ষণে বাধা দিতে গেলে সে আমার গলা টিপে হত্যাও করতে চেয়েছিল।’
শারীরিকভাবে ঘায়েল করার জন্য লামিয়া ও তার বোনদের একটি আইএস ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় ৪০ জন আইএস জঙ্গি তাদেরকে এক টানা ধর্ষণ করে।
লামিয়া বলেন, ‘সেখানে আমরা ৪০ জন আইএস জঙ্গির হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তারা যে কতটা ভয়ংকর দানব তা চিন্তাও করা যায় না! সেখানে আমাদের কতটা কষ্ট করতে হয়েছে!’
এরপর অনেকবার বিভিন্ন জঙ্গির কাছে বিক্রি করা হয়েছে। একেকবার বিক্রির জন্য দাম ধরা হয়েছে ১০০ ব্রিটিশ পাউন্ড। যতবারই তাদেরকে বিক্রি করা হয়েছে ততবারই পালানোর চেষ্টা করেছেন। পাঁচবার চেষ্টার পর শেষে সফল হয়েছেন।
প্রথমবার লামিয়াকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। পালানোর জন্য তিনি ঘরের জানালা ভেঙ্গে রাস্তায় লাফ দেন। তার এ পালানোর ঘটনা জেনে ফেলেন এক পথচারী। তিনি সেই পথচারীকে অনুরোধ করেন, যেন সে তার লুকাতে সাহায্য করে। তিনি তাকে জানান, তিন দিন কোনভাবে লুকিয়ে রাখলে নিজেই অন্য কোথাও চলে যাবেন। তার কথামত পথচারী লামিয়াকে নিয়ে তার বাসায় যান।
অস্ত্রসজ্জিত কয়েকজন আইএস জঙ্গি
লামিয়া বলেন, ‘যে পরিবারে আমি আশ্রয় নিয়েছিলাম সে পরিবারের লোকজনও আইএসকে ভয় করতো। তারা ভয়ে ছিলেন, যদি কোনোভাবে জানতে পারে আমাকে তারা লুকাতে সাহায্য করেছে তাহলে তারা তাদেরকে হত্যা করবে। তাই তিন দিন পর সেই পরিবারের সদস্যরাই দুই আইএস জঙ্গিকে খবর দিয়ে আমাকে তাদের হাতে তুলে দিল।’
এরপর জঙ্গিরা লামিয়াকে নিয়ে আইএসের কম্পিউটার সিস্টেমে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করার জন্য নিবন্ধন করে। আবার ছয়জন জঙ্গি তাকে ধর্ষণ করে বিক্রি করে দেয়। এর মধ্যেই একবার পালানোর চেষ্টা করে আবার ধরা পড়ে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করেন।
তখন বার বার পালানোর চেষ্টা আবার ধরা পড়াই লামিয়ার পেশায় পরিনত হয়েছিল। তাই ডেইলি মেইলের এ রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলার সময় এই প্রথমবারের মত তার মুখে হাসি দেখা গেল। কারণ কষ্ট সহ্য করতে করতে কোনো কষ্টই তার কাছে আর বড় মনে হয় না।
হাসতে হাসতে তিনি বলেন, ‘প্রতিবারই আমি পালানোর চেষ্টা করেছি। আবার প্রতিবারই তাদের হাতে ধরা পড়েছি। যতবারই ধরা পড়েছি ততবারই সহ্য করতে হয়েছে অমানবিক যন্ত্রণা। কিন্তু এ যন্ত্রণা আমাকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমি কখনই আশা ছাড়িনি। অসংখ্য নৃশংসতা ও অপরাধ দেখেছি। এগুলো দেখেই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শক্তি যুগিয়েছে আমাকে।’
এরপর সাদা চুলের এক ব্যক্তি লামিয়াকে কিনে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার স্ত্রী ও সন্তানও ছিল, তারপরও তিনি তাকে ধর্ষণ করতো।
লামিয়া বলেন, ‘আমি তাকে অনুরোধ করলাম যেন আমাকে তার যৌনদাসী হিসেবে বাসায় না নেওয়া হয়। দয়া করে আমাকে যেন মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু আমার অনুরোধ রাখলেন না; আমাকে ধর্ষণ করলেন।’
এমনকি বাঁচার জন্য তিনি সেই ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে জানান, তার স্বামী তাকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু তার স্ত্রীও স্বামীর মত কথা বলেন। অর্থাৎ স্ত্রী বলেন, যেহেতু সে অন্য ধর্মের মেয়ে সেহেতু তাকে ধর্ষণ করা জায়েজ। সেখানে লামিয়াকে দুই মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়।
একদিন লামিয়া লক্ষ্য করেন, সেই ব্যক্তির আরেক স্ত্রী আছে। সোনালি চুল ও নীল চোখের খুব সুন্দর নারী। জার্মানি ভাষায় কথাও বলতে পারেন।
লামিয়া বলেন, ‘তিনি দেখতে খুবই সু্ন্দর এবং ব্যবহারও খুব ভালো মনে হলো। কিন্তু যেহেতু তিনি সেই ব্যক্তির স্ত্রী তাই তাকে বিশ্বাস করতে পারলাম না।’
পরিবারের সব সদস্যকে চোখের সামনে হত্যা করতে দেখেছে লামিয়া। এখন পরিবার তার কাছে শুধুই স্মৃতি
সেখানে থাকাও নিরাপদ নয় ভেবে লামিয়া আবার পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আবারও ধরা পড়েন। তখন ওই সাদা চুল ওয়ালা পুরুষটি তাকে আইএসের এক নেতার হাতে তুলে দেয়। যতবারই তাকে বিক্রি করা হয়েছে ততবারই আগের মালিক পরের মালিককে বলে দিয়েছে, লামিয়া খুব খারাপ। সে বার বার পালানোর চেষ্টা করে। তাই তাকে যেন বেশি করে নির্যাতন করা হয় এবং চোখে চোখে রাখা হয়। নয়তো সে পালিয়ে যাবে।
এ নেতা আইএসের সেই এলাকার আমির। তিনি একজন দক্ষ বোমা নির্মাতা। তার কারখানা থেকেই এলাকার সব বোমা সরবরাহ করা হয়। কারখানায় প্রচুর গোলাবারুদ মজুদ রাখা। যেকোনো সময় একটু বিস্ফোরণ হলে পুরো এলাকা পুড়ে ছাই হবে। লামিয়াকে এ বোমা তৈরির কারখানাতে বোমা বানানোর কাজে নিয়োগ দেন আমির। লামিয়া প্রতিদিন ৫০টি মারাত্মক বোমা তৈরি করতেন। আর এই বোমাগুলো অপহৃত ইয়াজিদি শিশুদের দিয়ে আত্মঘাতি বোমা হামলার ঘটনা ঘটাতো।
বোমা তৈরি কারখানার পাশেই প্রতিদিন গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসতো লামিয়ার কানে।
লামিয়া বলেন, ‘আমার মনে হতো যেকোনো সময় বোমা হামলায় মারা যাবো আমরা। মরে গেলেও ভালো, অন্তত যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাবো। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো, তাদের হামলা করে পুড়িয়ে ছারখার করে দেই।’
শুধু লামিয়াই নয়, কারখানায় লামিয়ার মত অনেক নারীকে আনা হতো। লামিয়া তাদেরকে মুক্তির সম্ভাব্য উপায় বলে দিতেন। কিছুদিন পরই বিষয়টি জানতে পারেন আইএস নেতারা তাই সেখান থেকে আবার তাকে বদলি করে এবং শরিয়াহ আদালতে বিচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এটা আইএস নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা।
এক সার্জন তাকে আদালত থেকে ছাড়িয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কারণ তার শরীরে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছিল। এ নির্যাতনে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল শরীরের বিভিন্ন স্থানে। সার্জনের লামিয়ার উপর দয়া হয়। তিনি তার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য একটি মোবাইল ফোন দেন। আর এ মোবাইল দিয়েই লামিয়া কুর্দিস্তানে তার চাচার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার চাচা কুর্তিস্তানের সীমান্ত কর্মকর্তাদের ৭৫০০ মার্কিন ডলার দিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এবং এর সঙ্গে লামিয়ার জীবন থেকে বিদায় নেয় এক যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায়।
এখনো ঘুমের ঘোরে চমকে উঠেন লামিয়া। মনে হয়ে, সে আজ হাজারও কষ্টের সাগর পাড়ি দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু এখনও তার মত কত লামিয়া আইএসের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। এখনও তার ছোট বোনদের কচি মুখটি তার সামনে ভেসে উঠে। বাবা ও দুই ভাইকে সেই কতদিন আগে দেখেছেন। তাদের মৃত্যুর সময় গুলির শব্দ কানে এসেছিল। এখন পরিবার তার কাছে স্মৃতি ও হাহাকার ছাড়া কিছুই নয়। কাঁদতে কাঁদতে আজ তার অশ্রুও শেষ হয়ে গেছে। এখন বুক ফাটলেও অশ্রু আসে না।